সুকুমার সরকার, ঢাকা: মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যে সংসদ ভাঙার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহবুদ্দিন। জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি।
এদিন সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি শাহবুদ্দিন। তার পর রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি শাহবুদ্দিনের সঙ্গে ৩ বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বৈঠক বসে। আলোচনার পর নেওয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সংসদের বিলুপ্তি ঘটেছে। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এবং বিভিন্ন মামলায় আটকদের মুক্তি দেওয়াও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন।
[আরও পড়ুন: থানায় ঢুকে খুন! অভিযুক্তদের শাস্তি ও নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি বাংলাদেশ পুলিশের]
এর আগে আজ বিকেল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে এক ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা করেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের পরেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সংসদ বিলুপ্ত করা হয়নি। আজ বিকাল ৩টার মধ্যে সংসদ ভাঙা না হলে আগামীকাল কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন তিনি দ্রুত জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করবেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি অভ্যুত্থানের পরেও এখনও ফ্যাসিস্ট হাসিনার জাতীয় সংসদ রয়ে গিয়েছে।" কিন্তু চূড়ান্ত সময়সীমার আগেই সংসদের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। ফলে এখন প্রশ্ন, দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন?
গতকাল ইস্তফা দিয়ে দেশ থেকে হাসিনা চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়ে দিয়েছিলেন, পরবর্তী সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তৈরি করা হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ কে হবেন সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তালিকায় উঠে আসছে একাধিক নাম। জাতীয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সবার আগে উঠে আসছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নাম। সেনা শাসন সরিয়ে ‘দেশ গড়তে’ এই ইউনুসকে চেয়ে ভিডিও বার্তা দিতেও দেখা গিয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্রদের। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী তালিকায় দ্বিতীয় যে নাম উঠে আসছে তিনি বিএনপি প্রধান তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তথা খালেদাপুত্র তারেকও রয়েছেন এই দৌড়ে। এছাড়া বাংলাদেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর আবদুর রৌফ তালুকদারের নামও উঠে এসেছে।