সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে (Bangladesh) আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। মানবিকতার খাতিরে রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে আশা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে ঢাকা। কিন্তু এর ফলে রীতিমতো চাপ বেড়েছে দেশের অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উপর। তাই রোহিঙ্গাদের মায়ানমার ফেরত পাঠাতে এবার রাশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তানকে অনুসরণ নয়, আফগানিস্তান নিয়ে ‘স্বাধীন সিদ্ধান্ত’ নেবে বাংলাদেশ]
রোহিঙ্গা (Rohingya) ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই সরগরম আন্তর্জাতিক রাজনীতি। বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার-সহ একাধিক দেশ জড়িয়ে গিয়েছে এই বিষয়ে। এমনকী উত্তাল হয়েছে রাষ্ট্রসংঘও। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে মায়ানমার। তবে সেই চুক্তির বাস্তবায়ন আজও হয়নি। বারবার আইনি জটিলতা তৈরি করে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া আটকে দিয়েছে নাইপিদাও। তারউপর দেশটির শাসন সেনাবাহিনীর হাতে চলে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের ভাগ্য অনিশ্চিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এহেন পরিস্থিতিতে এবার মস্কোর সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সোমবার ঢাকায় বিদেশমন্ত্রকে ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেনতেভিচ মান্টিটাস্কি। সেই সময় আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি উঠে আসে। সাক্ষাৎকালে ঢাকা-মস্কো বিশেষ সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরে মোমেন বলেন, “একাত্তর সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান রাশিয়া সফর করেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য রাশিয়ার সরকার ও জনগণের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমার সশস্ত্র বাহিনী অভিযান চালায়। এরপর প্রাণভয়ে ৬ লক্ষ ২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রয়েছএ প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের ডাকে সাড়া দিয়ে বিশ্বের নানা দেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তবে এখনও পর্যন্ত শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।