সুকুমার সরকার, ঢাকা: শীতের মরশুমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে পাঠানোর কাজ দ্রুত গতিতে চালাচ্ছে বাংলাদশ (Bangladesh) সরকার। সোমবার সকালে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে রোহিঙ্গাদের আরও একটি দল ভাসানচরের উদ্দেশে পাড়ি দেয়।
[আরও পড়ুন: আরও বাড়ল ছুটির মেয়াদ, চলতি মাসেও বন্ধ বাংলাদেশের স্কুল, ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর]
প্রশাসন সূত্রে খবর, এদিন ২ হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিয়ে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে সকাল ১০ টা নাগাদ নোয়াখালির ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয় নৌসেনার পাঁচটি জাহাজ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এক শরণার্থী জানান, তাঁর পরিবারের সব সদস্যই ভাসানচরের সরকার নির্মিত বাসস্থানে যাচ্ছেন। কক্সবাজারের শিবিরে তাঁরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন। যাঁরা ইতিমধ্যে ভাসানচরে গিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে জেনেছেন তিনি। ভাল থাকার জন্য নিজেদের ইচ্ছায় তাঁরা ভাসানচরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় সূত্রে খবর, এর আগে তিন দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৬ হাজার ৬৮৮ জনকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় স্থানান্তর করা হয় ১ হাজার ৬৪২ জনকে। ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জনকে স্থানান্তর করা হয়। আর চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় স্থানান্তর করা হয় ৩ হাজার ২৪২ জনকে। সব মিলিয়ে ১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হাসিনা সরকারের।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগেই কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় চার লক্ষ উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা। তারপর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন সাত-আট লক্ষ অসহায় মানুষ স্রোতের মতো আসতে থাকায় তখনই তাদের আবাসস্থল-সহ অন্যান্য ব্যবস্থা যে রকম করার প্রয়োজন ছিল তাৎক্ষণিকভাবে সেভাবে করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেই ক্যাম্পের ভিতরে এখন বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ঢুকেছে, অবাধে মাদক ও নারী পাচারের মতো চরম সব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সুতরাং শুধু বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বার্থে নয়, রোহিঙ্গা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত লোকজনের কল্যাণ ও নিরাপত্তার স্বার্থে ভাসানচরে তারা গেলে সেটির বিরুদ্ধে কোনও প্রপাগান্ডা ও বাধার সৃষ্টি করা উচিত নয় বলেই মনে করছে হাসিনা প্রশাসন।