সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের (Bangladesh) মুক্তিযুদ্ধের সময় অমানবিক নৃশংস অপরাধের মামলায় দেশের উত্তর জনপদ জেলা নওগাঁর আরও তিন রাজাকারের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক। রেজাউল করিম মন্টুর পাশাপাশি বাকি দুই আসামিরা হল মহম্মদ শহিদ মণ্ডল ও মহম্মদ নুরুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি মহম্মদ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি একেএম হাফিজুল আলম। তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, আসামি মহম্মদ রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামাতে ইসলামি জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামাতের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজের বাড়িতে চলে আসেন। এরপরই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন মন্টু।
[আরও পড়ুন: মোদি জমানায় কাজ হারিয়েছে ২ কোটি নারী! বিজেপি সরকারের ৮ বছরের পূর্তিতে কটাক্ষ চন্দ্রিমার]
আসামিদের বিরুদ্ধে সাতজনকে হত্যা-সহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে সম্পত্তি ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় তিনজন আসামির মধ্যে দু’জন গ্রেপ্তার হলেও একজন এখনও পলাতক। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইবুনাল’ (আইসিটি) গঠন করে বাংলাদেশ। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে ওই ট্রাইবুনালে। বিএনপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজাকার ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তাঁর আমলে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত বর্বর পাকপন্থী জামাত নেতাকে। অভিযানে নিকেশ করা হয়েছে শতাধিক জঙ্গি ও মাদক পাচারকারীকে। সব মিলিয়ে মৌলবাদীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর হাসিনা।
তবে সরকার কড়া পদক্ষেপ করলেও মৌলবাদীদের প্রভাব সেই অর্থে শেষ হয়ে যায়নি। বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে জেএমবি ও নব্য জেএমবি জঙ্গি সংগঠনগুলি। এছাড়াও প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে শিকড় জমানোর চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট।