সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাড়ছে করনার (Corona) প্রকোপ। দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এহেন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রুখতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমস্ত স্কুল-কলেজ ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
[আরও পড়ুন: বিস্কুটের নামে দু’লক্ষ টাকার ইলিশ পাচারের চেষ্টা, বাংলাদেশ সীমান্তে গ্রেপ্তার এক]
জানা গিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-সহ (বুয়েট) অন্য প্রতিষ্ঠানগুলি ফের অনলাইন ক্লাস চালু করেছে। ওমিক্রন সংক্রমণ বিস্তার রোধে ৬ দফা জরুরি নির্দেশ জারি করেছে সরকার। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে শুক্রবার থেকেই নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়েছে। ওই নির্দেশিকা মতে, ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা নেবে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বিয়ে-শাদি অনুষ্ঠানগুলোতে ১০০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ করা যাবে না। এসব অনুষ্ঠানে যারা যোগদান করবেন তাদের অবশ্যই করোনা টিকার সনদ অথবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করা পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।
সরকারই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানাগুলিতে কর্মীদের অবশ্যই করোনা টিকার সনদ সঙ্গে রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দায়িত্ব বহন করবে। বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন-সহ সবধরনের জনসমাবেশস্থলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বিধিনিষেধগুলো স্থানীয় প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি মনিটর করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কঠোর বিধিনিষেধের কথা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে গত কয়েক দিন ধরেই বলা হচ্ছিল। মাস্ক ব্যবহার ও যানবাহনে চলাচল নিয়ে এরই মধ্যে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করা আছে। বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশে প্রথম করোনা ধরা পড়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যু হয় কোভিডে। ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়। এর পর মাঝে কিছু দিন নিয়ন্ত্রণে থেকে সম্প্রতি সংক্রমণ আরও বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় নতুন নির্দেশনা জারি করল সরকার। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে একদিনে চারজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। নতুন করে ১০ হাজার ৮৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার কথাও জানানো হয়। শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এই বিষয়ে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আপাতত দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুখোমুখি ক্লাস বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে থাকবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দীপু মনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যেখানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব, সেখানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা থাকবে। এ ছাড়া অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমও থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সেখানেও মুখোমুখি ক্লাস বন্ধ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের এখন যেভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে, অসুস্থ হলে আইসোলেশন বা বাড়িতে পাঠানো ইত্যাদি করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকদের অফিসে যেতে হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।