সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিনামূল্যে দেশবাসীকে করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine)দেবে বাংলাদেশ (Bangladesh)। ঢাকায় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিব খন্দরার আনোয়ারুল ইসলাম একথা জানিয়েছেন। করোনা ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের (SII) কাছ থেকে কিনে দেশের দেড় কোটি মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। প্রত্যেকের জন্য ভ্যাকসিনের দু’ডোজ দরকার। সেই হিসেবেই সেরাম থেকে ৩ কোটি ডোজ কেনার পরিকল্পনা হাসিনা প্রশাসনের। ঢাকায় মন্ত্রিপরিষদের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভারচুয়াল বৈঠকে কোভিড-১৯’এর (COVID-19) দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলা ও ভ্যাকসিন নিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। ঢাকার গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। ঘরের বাইরে বের হলে, মাস্ক না পরার অপরাধে সর্বোচ্চ জরিমানায় কাজ না হলে পাশাপাশি জেলের সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিনের বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ”যে করেই হোক, দেশের সকল মানুষের জন্য করোনা প্রতিরোধ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে হবে। এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ, দ্রুত ভ্যাকসিন এনে তা সর্বত্র সরবরাহ করা।” এ নিয়ে পরবর্তী বৈঠক বুধবার।
[আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করল চিন, তবুও উদ্বিগ্ন ঢাকা]
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দর আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ”অক্সফোর্ডের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট।” বাংলাদেশের অর্থ বিভাগ ভ্যাকসিন কেনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠাবে।” ভ্যাকসিন কীভাবে পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) একটা গাইডলাইন আছে। প্রথম কারা পাবে, দ্বিতীয় ধাপে কারা পাবে সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটা পরিকল্পনা তৈরি করছে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় রয়েছেন – পুলিশ, প্রশাসনের লোকজন যারা সরাসরি ময়দানে নেমে চাকরি করছেন, তাঁরাই সর্বাগ্রে পাবেন।
[আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মহলের চক্রান্তকে উপেক্ষা করেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ]
চিনা প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাকের তৈরি করোনা টিকার ট্রায়াল হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে। সেটি কোন পর্যায়ে আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ”তা আমরা বাতিল করিনি। ওরা টাকা চাইছে। সেই টাকা দিতে সরকার এখনও রাজি হয়নি। তিনি আরও জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহ থেকে যাঁরা মাস্ক পরছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। রাজধানী ঢাকার মানুষজনের মধ্যে এখনও সচেতনতার অভাব আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। তাই ঢাকায় এবার থেকে মাস্ক না পরলে জরিমানা দিতে হবে ৫০০ টাকা। এটাই সে দেশের সর্বোচ্চ জরিমানা। এতে কাজ না হলে প্রয়োজনে শাস্তি হিসেবে জেলের সাজাও দেওয়া হতে পারে।