সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহুদিনের ও বহুজনের চেষ্টায় অবশেষে হাতে এসেছে করোনার প্রতিষেধক। আর বিনা শর্তে তা বাংলাদেশ-সহ পড়শি দেশগুলিকে জোগান দিচ্ছে ভারত (India)। ফলে কূটনীতির ময়দানেও কিছুটা সুবিধা পেয়েছে নয়াদিল্লি। বিশেষ করে ‘টিকা’ হাতিয়ার করে ঢাকার উপর চিনের প্রভাব অনেকটাই খর্ব করতে সক্ষম হয়েছে মোদি সরকার বলেই মত বিশ্লেষকদের।
[আরও পড়ুন: মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করার উদ্যোগ, ৭০ হাজার গৃহহীনকে বাড়ি উপহার দিল হাসিনা সরকার]
সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, শুরুর দিকে চিনের তৈরি প্রতিষেধক ‘করোনাভ্যাক’ পেতে আগ্রহী ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভ্যাকসিন জোগান দিতে বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করে চিন। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, টিকার ট্রায়ালের খরছ বহন করতে হবে ঢাকাকে। শুধু তাই নয়, সিনোফার্মের তৈরি টিকা কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। কিন্তু এহেন সময়ে ‘বন্ধু’ বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায় ভারত। উপহারস্বরূপ, পুণের সেরাম ইন্সটিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড টিকার ২০ লক্ষ ডোজ ঢাকাকে দেয় নয়াদিল্লি। এছাড়া, সেরামের সঙ্গে ৩ কোটি টিকার ডোজ কিনতে চুক্তিবদ্ধ হয় হাসিনা প্রশাসন। এই গোটা ঘটনাক্রমই হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে। ফলে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে কদর বেড়ে গিয়েছে ভারতের। এদিকে, ট্রায়ালের খরচ বহন করতে বলায় বেজিংয়ের উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেও খবর। কারণ, প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে এমনিতেই চাপের মুখে রয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতি। তারপর, চিনা টিকার ট্রায়ালে যে বিপুল খরচ হবে তা বহন করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছে ঢাকা।
উল্লেখ্য, ঋণ ও করোনা টিকার টোপ দিয়ে ভারতের পড়শি দেশগুলিকে ঘিরতে চাইছে শি জিনপিং প্রশাসন। পালটা, বাণিজ্য, সামরিক সহযোগিতার বলে কূটনৈতিক মঞ্চে বাংলাদেশ ও ভুটানে রীতিমতো চিনের উপর চাপ বজায় রেখেছে ভারত। নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় বেজিং প্রভাব বিস্তার করলেও সম্প্রতি সেই দেশগুলিতেও কিছুটা ভারতপন্থী হাওয়া বইছে। এহেন পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির হাতে করোনার প্রতিষেধক যে কূটনৈতিক অন্যত অস্ত্র হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।