সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক সমীকরণে জট। ভোটের আগে জামাত-ই-ইসলামি কট্টরপন্থী সংগঠনের ঘনিষ্ঠ বিএনপির সঙ্গে তৈরি হওয়া বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ভাঙনের আশঙ্কা। বিএনপিকে জামাতের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার হুমকি দিয়ে জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত গণফোরামের। শনিবার গণফোরামের বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে দলের শীর্ষনেতা ডক্টর কামাল হোসেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘জামাতকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাজনীতি করিনি, আর ভবিষ্যতেও করব না।’ তাহলে বিএনপির সঙ্গে জোট ভাঙছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বলা যেতে পারে, যাতে তারা জামাতকে ত্যাগ করে।’
কামাল হোসেনের এই বক্তব্যের পরই নানা মহলে শুরু হয়েছে সমালোচনা। ইতিহাসের অধ্যাপক ডক্টর সাইদ ইফতেখারের ব্যাখ্যা, বিএনপি যে জামাত ঘনিষ্ঠ, তা জেনেই জোটে গিয়েছিল গণফোরাম। আর তাতে নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে তাদের। এবারই তারা প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুটি আসন পেয়েছে। বিজয়ীদের সংসদে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজেদের স্বচ্ছ, ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখার একটা তাগিদও অনুভব করছে গণফোরাম। আর তাই জামাত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাইছে। আরেকপক্ষের ধারণা, গণফোরাম সংসদে যোগ দিতে চায়। উলটে বিএনপির ওপর চাপ বাড়াতে কৌশল হিসেবে জামাত প্রসঙ্গটিকে তাঁরা সামনে আনছেন।
[ মেয়েদের বেশি পড়াবেন না’, মন্তব্য করে বিতর্কে কট্টরপন্থী মৌলবি]
অন্যদিকে, বিএনপির সামনে যদি এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, ঐক্যফ্রন্ট নয়তো জামাত-ই-ইসলামিকে বেছে নিতে হবে, তাহলে তাদের সামনে কোন পথটি বাস্তবসম্মত বা লাভজনক হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, জামাতের ওপর কিছুটা নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে বিএনপির। যা মূলত মনস্তাত্বিক। মতাদর্শের দিক থেকেও জামাত, বিএনপি খুব কাছাকাছি। ফলে ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করার মানসিকতা থেকে না সরলে বিএনপির পক্ষে এগিয়ে চলা কঠিন হবে। আর এই জায়গাতেই কড়া অবস্থান ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের। আর নতুন সরকারের আমলে নিজেদের ইমেজ পুনরুদ্ধারে গণফোরাম চাইছে, জামাতহীন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
The post জামাতহীন বিরোধী জোট, চাপ বাড়িয়ে বিএনপিকে বার্তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শরিকের appeared first on Sangbad Pratidin.