সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা (Corona) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। মারণ রোগের সেই অর্থে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ না থাকায় ভরসা একমাত্র ভ্যাকসিন। এবার চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা খুব শিগগির সরবরাহের জন্য ভারতকে অনুরোধ করল বাংলাদেশ।
[আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই ধর্ষণের শিকার তরুণী, বাংলাদেশে গ্রেপ্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার]
মঙ্গলবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হয় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের। সেই সময় তিনি দ্রুত টিকা জোগান দেওয়ার অনুরোধ জানান। এক বিবৃতি জারি করে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজের চাহিদা-সহ বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছেন। ফোনে ভারতে ঘূর্ণিঝড়-সহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শোকপ্রকাশ করেন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন আবদুল মোমেন। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান তিনি। পাশাপাশি, জয়শংকরকে মোমেন আরও জানান যে, ভারত যেহেতু সময়মতো টিকা জোগান দিতে পারেনি, তাই ভ্যাকসিন চেয়ে আমেরিকার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এই বিষয়টি আমেরিকার কাছে আরও জোরদার করে তুলে ধরার জন্য জয়শংকরকে অনুরোধ জানান মোমেন। এই বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ (Bangladesh)। ভ্যাকসিন ও ওষুধের চরম অভাব দেখা দিয়েছে দেশে। এহেন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন উৎপাদনে রাশিয়া ও চিনকে অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসন। ভারতের টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সেরাম ইন্সটিটিউট যথাসময়ে বাংলাদেশে টিকা রপ্তানি করতে না পারায় রাশিয়া ও চিনের টিকা আনার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ভারত থেকে অক্সফোর্ড -অ্যাস্ট্রাজেনেকার থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনতে বাংলাদেশ চুক্তি করে। সেই টিকা আসতে শুরু করে। ভারত থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লক্ষ ডোজ টিকা এসেছে। সে হিসাবে এখন মজুদ আছে ২৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৩৯ ডোজ। শুধু কেনা নয়, বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩ লক্ষ ডোজ উপহার দিয়েছে ভারত। করোনা বেড়ে যাওয়ায় নিজেদের চাহিদা সামাল দিতে সম্প্রতি ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চিন থেকে টিকা আনা নিয়ে আলোচনা শুরু করে বাংলাদেশ। টিকা পেতে বাংলাদেশ টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভিকেও চিঠি দিয়েছে।