সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা সরকারের পতনের ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অভিমুখ বদলে গিয়েছে। আঁচ পড়েছে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎচুক্তিতেও। ভারতের এই শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে হাসিনা সরকারের আমলে বিদ্যুৎচুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এখনই চুক্তি বাতিল না হলেও তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছে ইউনুস সরকার। সোমবার সুর খানিকটা নরম করে আদানি গোষ্ঠীর কাছে বিদ্যুতের দাম কমানোর বার্তা দিলেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এবং শক্তি দপ্তরের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবীর।
পদ্মাপাড়ের সংবাদপত্র ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে চুক্তি বাতিল না-হলেও আদানিদের থেকে সস্তায় বিদ্যুৎ চাইবে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। বিদ্যুৎ এবং শক্তি দপ্তরের উপদেষ্টা দাবি করেছেন, বাংলাদেশে যতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তাতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। দেশে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের মধ্যে আদানিরা মাত্র এক-দশমাংশের জোগান দেন। এদিন আদানি গোষ্ঠীর নাম করে কবীর বলেন, "কোনও বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাকে আমরা ব্ল্যাকমেল করতে দেব না।"
‘দ্য ডেলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে আদানি গোষ্ঠী বাংলাদেশে এক ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ১৪.০২ বাংলাদেশি টাকা দাম ধার্য করে। যদিও ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বিদ্যুতের মাশুল কিছুটা কমিয়ে ইউনিট পিছু ১২ টাকা করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দামের থেকেও কম দামে আদানিদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে বাংলাদেশ। অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকেও অপেক্ষাকৃত কম দামে বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে ঢাকা।
কিছুদিন আগে বকেয়া পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। এইসঙ্গে ভারতীয় এই কোম্পানি হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া ৮০ কোটি ডলার পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এর পর আমেরিকায় আদালতে বিপাকে পড়ে আদানি গোষ্ঠী। যার পরে হাসিনার আমলে হওয়া আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎচুক্তি খতিয়ে দেখার কথা জানায় মুহাম্মদ ইউনুস সরকার।
২০১৭ সালে শেখ হাসিনার আমলে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎচুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এই চুক্তি নিয়ে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর পর গত সপ্তাহে বাংলাদেশের হাই কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেয়। এর জন্য আদালতের নির্দেশে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা। পাশাপাশি ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারও আদানি-সহ ছটি সংস্থাও সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎচুক্তি খতিয়ে দেখছে।