shono
Advertisement

শত বাধা পেরিয়ে তৈরি স্বপ্নের পদ্মা সেতু, বাংলাদেশকে অভিনন্দন আমেরিকা ও চিনের

পদ্মা সেতু চালু হলে অর্ধেকেরও কম সময় লাগবে কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে।
Posted: 09:43 AM Jun 25, 2022Updated: 09:43 AM Jun 25, 2022

সুকুমার সরকার, ঢাকা: আর মাত্র কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। তারপরই খুলে যাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেই উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে আমেরিকা ও চিন।

Advertisement

পদ্মা সেতু চালু হলে অর্ধেকেরও কম সময় লাগবে কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে। দুই শহরের মধ্যে যাতায়াতে আগে লাগতো প্রায় ১১ঘণ্টা। কিন্তু পদ্মা সেতু তৈরি হলে তা কমে দাঁড়াবে প্রায় ৫ ঘণ্টা। শুক্রবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করবে। বাণিজ্যকে উৎসাহিত করবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।” মানুষ ও পণ্যপরিবহণ সহজ করতে পরিকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি উদাহরণ হল পদ্মা সেতু।”

[আরও পড়ুন: বোরখা পরে হামলা ঘাতক জামাইয়ের, স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির সবাইকে কুপিয়ে হত্যা বাংলাদেশে]

ঢাকায় চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং পদ্মা সেতু নিয়ে তার মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন এক ভিডিও বার্তায়। রাষ্ট্রদূত বলেছেন, “পদ্মা সেতু আমার কাছে সাহসের একটি প্রতীক, সংকল্পের প্রতীক এবং সমৃদ্ধির প্রতীক।” শুক্রবার চিনা রাষ্ট্রদূতের এই ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়েছে। তাতে রাষ্ট্রদূত বলেন, “বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এক দশকের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে! এ পর্যায়ে আমি এই অসামান্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে চাই। আজ আমার কাছে রয়েছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি এই ক্ষুদ্রাকৃতির পদ্মা সেতু। সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়নকারী কোম্পানি চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ বা এমবিইসি এটিকে আমার কাছে একটি স্মারক হিসেবে পাঠিয়েছে।”

ভিডিও বার্তায় চিনা রাষ্ট্রদূত নিজস্ব অর্থে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহসিকতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘সেতুটি আমার কাছে সাহসের একটি প্রতীক। স্বল্পোন্নত দেশ বাংলাদেশ এমন সেতু নির্মাণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। তারপরও বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সেতুটি শুধু বাস্তবায়নই হয়নি, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এর শতভাগ নির্মিত হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে যদি সাহসের কোনো সীমা না থাকে, তবে আকাশ তার সীমা।”

বাংলাদেশের নিজের টাকায় নির্মিত এই সেতুটি দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের এলাকাগুলোকে ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। ধারণা করা হচ্ছে, সেতুটি দেশের জিডিপি ১.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করবে। কারণ পদ্মা সেতু চালু হলে তা দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াবে। সরবরাহ ব্যবস্থাতেও উন্নতি আসবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য এই সেতু অন্যরকম এক আবেগের নাম। কারণ লঞ্চ বা ফেরিতে পদ্মা পার হয়ে ঢাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দশকের পর দশক ধরে তারা দুর্ভোগ সয়েছেন। এই সেতু চালু হলে তা দেশের পর্যটন খাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ এতে করে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা কিংবা সুন্দরবন ভ্রমণের সময় অনেকটা কমে আসবে।পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর। আর সেই কাজ সম্পন্ন হয় চলতি বছরের ২২ জুন। প্রকৌশলীরা জানান, চিন, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ইংল্যান্ড, কোরিয়া, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডসহ ২০টি দেশের প্রকৌশলীরা এখানে কর্মরত ছিলেন।

[আরও পড়ুন: বন্যাবিরোধী পরিকাঠামোয় জোর, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ হাসিনার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement