সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে বিস্তৃত হচ্ছে হিন্দু নিপীড়নের ছবি। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু শিক্ষক ও চাকরিজীবীদের জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। এবার কোপ পড়েছে চট্টগ্রামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেনের ঘাড়ে। প্রবল চাপের মুখে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি! এই ঘটনায় নতুন করে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠছে।
জানা গিয়েছে, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে ছিলেন অনুপম সেন। বাংলাদেশ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। ৪ ডিসেম্বর একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ। সেখানেই উপাচার্য-সহ আরও দুজনের পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, শুক্রবার রাত ৮টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে তাঁদের। অন্যথায় শনিবার কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। এর পরই শুক্রবার সন্ধ্যায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য অনুপম সেন, সহ-উপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা ও কোষাধ্যক্ষ তৌফিক সাঈদ।
এদিনই নিজের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠিয়ে দেন অনুপম সেন। যদিও চিঠিতে ছাত্র বিক্ষোভের কোনও উল্লেখ করেননি তিনি। শুধু জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে দায়িত্ব পালন থেকে সরে আশার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে, সহ-উপাচার্য ব্যক্তিগত ও পারিবারিক এবং কোষাধ্যক্ষ ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ঢাকা, রাজশাহী-সহ নানা জায়গার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিন্দু শিক্ষক বা অধ্যাপকরা পদত্যাগ করেছেন। সম্প্রতি পড়ুয়ারা অভিযোগ তোলে অনুপম সেন ইসকন সমর্থক। গত নভেম্বর মাস থেকেই বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছে মৌলবাদীরা। গ্রেপ্তার হন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু। এই আহবেই চট্টগ্রামের ওই উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে পড়ুয়ারা। বিশ্লেষকদের মতে, পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ না করলেও শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণেই যে অনুপম সেন বাধ্য হয়েছেন ইস্তফা দিতে তা একপ্রকার স্পষ্ট।