সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) আমন্ত্রণে চারদিনের সফরে দিল্লিতে পা রেখেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় সময়ে দুপুর ১২টা নাগাদ বাংলাদেশ (Bangladesh) এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি তাঁকে নিয়ে দিল্লির ইন্দির গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছয়। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান ভারতের প্রতিনিধিরা। হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া পুষ্পস্তবক। সকলের সঙ্গে করমর্দন করেন তিনি। করোনা (Coronavirus) মহামারীর পর এবারই প্রথম ভারত সফরে এলেন শেখ হাসিনা। তাঁর সফর সঙ্গী হিসেবে বিদেশমন্ত্রী ডা. এ কে আবদুল মোমেনের আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি বাদ পড়েছেন বলে খবর। সম্ভবত বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, অসুস্থতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সঙ্গে ভারত সফরে যাননি বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তাঁর এই বক্তব্য দেশের অভ্যন্তরে আলোড়ন ফেলে দেয়। আলোচনা-সমালোচনার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি এই সফর থেকে বাদ পড়লেন। যদিও একেবারে শেষ মুহূর্তে জানা যায়, মোমেন দিল্লি যাচ্ছেন না।
[আরও পড়ুন: এসেছিলেন ভাইপোকে ভরতি করাতে, এখন বিনা বেতনে সেই স্কুলেরই শিক্ষক ‘মিলন মাস্টার’]
ঢাকা ও দিল্লির তরফে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটা হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, রবিবার গভীর রাতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বিদেশমন্ত্রীর ভারত না যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়ার আগে দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র মারফৎ এই খবর জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘কেউ ১০০% নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, ভগবানও নয়’, নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর]
হাসিনার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে ৬ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পরে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করা হবে। ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করবেন হাসিনা। পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা তাঁর। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে যেতে পারেন রাজস্থানের খাজা গরিব নওয়াজ দরগাহ শরিফ, আজমির শরিফে। সোমবার, ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগা পরিদর্শন করবেন। শেখ হাসিনার চারদিনের এই সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর জল বণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।