সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউনুসের আমলে বাংলাদেশে স্কুলস্তরের পাঠ্যসূচি বদল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল। নতুন বছরে তা বাস্তবায়িত হয়েই গেল। বৃহস্পতিবার নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। দেওয়া হয়েছে নতুন বইপত্র। আর তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে একা মুজিবুর রহমান নন, আরও তিনজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষক এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দি এবং শেখ মুজিবর রহমান। এক্ষেত্রে মুজিবের গুরুত্ব কমিয়ে ফেলার মধ্যে দিয়ে তাঁর নামই মুছে ফেলতে তৎপর হাসিনা পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার, তা স্পষ্ট। এনিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ল ইউনুস সরকার।
গত জুলাইয়ে বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানের জেরে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়। তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন, তার পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি হয়। ডঃ মহম্মদ ইউনুস হন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। আর তারপর থেকেই আওয়ামি লিগ তথা মুজিবের ইতিহাস মুছে ফেলতে তৎপর বর্তমান সরকার। সত্তরে যে শেখ মুজিবর রহমানের আওয়ামি লিগের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ, দিকে দিকে তাঁর মূর্তি ভাঙা হয়েছে। এবার নতুন পাঠ্যবইয়ে দেশের স্বাধীনতার একক ঘোষণাকারী হিসাবেও তাঁর নাম বাদ পড়ল।
নতুন বছরে নবরূপে পাঠ্যবইগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি নতুনভাবে রাখা হয়েছে। সে দেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড মোট ৪৪১ টি পাঠ্যবইয়ের সংস্কার করেছে। পঞ্চম শ্রেণিতে ‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা’ শীর্ষক লেখায় বিষয়টি এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল 'অপারেশন সার্চলাইট'। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৬ মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারও স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।’’ এদিকে, চতুর্থ শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইয়েও স্বাধীনতা ঘোষণা সংক্রান্ত বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবির পাশাপাশি মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার ছবিও রাখা হয়েছে।