সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিন বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত করে নিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস! হাই কোর্টের রায়ে বাতিল হয়ে গেল বাংলাদেশের তদারকি সরকার বিলুপ্তির বিধান। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে তদারকি সরকার বাতিলের বিধান আনা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই পঞ্চদশ সংশোধনীর দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা বাতিল করে দিল বাংলাদেশের হাই কোর্ট।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ এবং ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে তদারকি সরকারের আইন বিলুপ্ত করা হয়। সম্প্রতি ওই সংশোধনীর বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকটি রিট পিটিশন দায়ের হয় আদালতে। মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর যৌথ বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, পঞ্চদশ সংশোধনীর ওই ধারাদুটি বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে, যেটি হল গণতন্ত্র।
হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পুরো সংশোধনীটি বাতিল করেনি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে পুরো সংশোধনীটি বাতিল হবে কিনা সেটা ঠিক করার ভার দেওয়া হয়েছে আগামী সংসদের উপর। হাই কোর্ট বলছে, জনগণের মতামত নিয়ে আগামী দিনে জাতীয় সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনীর বাকি ধারাগুলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, হাই কোর্টের এই রায়ে পোয়াবারো হতে চলেছে ইউনুস সরকারের। এর ফোলে কার্যত সাংবিধানিক বৈধতা পেল ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। এই রায়ে বলিয়ান হয়ে দীর্ঘদিন তদারকি সরকার চালিয়ে যেতে পারবেন তিনি। আসলে দ্রুত নির্বাচন করাতে বেশ কিছুদিন ধরেই ইউনুসের উপর চাপ বাড়াচ্ছে খালেদা জিয়ার বিএনপি। দেরিতে ভোট হলে বাংলাদেশে অরাজকতা বাড়বে বলে তাদের দাবি। অন্য কয়েকটি মূল ধারার রাজনৈতিক দলও বাংলাদেশে দ্রুত ভোট চাইছে। কিন্তু মহম্মদ ইউনুস জানিয়ে দিয়েছেন, সংস্কার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে নির্বাচন সম্ভব নয়। বিজয় দিবসে ইউনুসের ভাষণের অনেক সময়জুড়ে ছিল নির্বাচন। তিনি বলেন, ভোটার তালিকায় বেশ কিছু সংশোধন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। নির্ভুলভাবে ভোটার তালিকা তৈরি করে তারপর নির্বাচন করাতে গেলে সময় লাগবে। তাই ২০২৫ সালের একেবারে শেষদিকে ভোট হতে পারে। বা ২০২৬ সালের প্রথমদিকে ভোট হতে পারে বাংলাদেশে। এই রায়ের পর সেই সময়সীমার মধ্যেও তিনি বাংলাদেশে ভোট করাবেন কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।