সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামল বাংলাদেশের জামাত-ই-ইসলামি। কুমিল্লায় একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানোর ভিডিও ভাইরাল হতেই শক্ত হাতে রাশ টানার চেষ্টা করল অন্তর্বর্তী সরকার। ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জামাত সমর্থককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই খবর জানিয়েছেন জামাত শিবিরের জেলাস্তরের সম্পাদক মহম্মদ বেলাল হোসেন। বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, দেশের কোনও মানুষকে এভাবে হেনস্তার ঘটনা একেবারে সমর্থন করে না জামাত, মুক্তিযোদ্ধা তো নয়ই। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের কটাক্ষ, মুজিবের মূর্তি ভেঙে ইতিহাস মোছার চেষ্টার পর মুক্তিযোদ্ধার হেনস্তায় দলীয় সমর্থকদের বহিষ্কার স্রেফ লোকদেখানো।
ঘটনা রবিবারের। কুমিল্লার একটি ঘটনা ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, আবদুল হাই কানু নামে এক মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা। চৌদ্দগ্রামের লুদিয়ারা গ্রামে, নিজের বাড়ির কাছে তিনি করজোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সামনে প্রচুর জনতা। তাঁদের সঙ্গে প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধার তর্কাতর্কি হচ্ছে বলে বোঝা যায়। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাকে ক্ষমা চাইতে বলছেন। কেউ কেউ বলছেন, কুমিল্লা ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাতে হাত জোড় করে আবদুল হাই অনুরোধ করছেন, এভাবে তাঁকে তাড়ানোর কথা না বলতে। তিনি গ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে চান না। তাতে উত্তেজিত জনতা তাঁকে প্রশ্ন করছেন, ''আমরা এত বছর বাড়িতে থাকতে পেরেছি?'' জুতোর মালা পরা অবস্থাতেই মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে ঘোরানো হয় গ্রামে।
এরপরই ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে জামাত। তাতেই পদক্ষেপ নিল জামাত শিবির। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ২ সমর্থককে বহিষ্কার করা হল। তাদের নাম মুহাম্মদ আবুল হাসেম, মুহাম্মদ অহিদুর রহমান। সংগঠনের কুমিল্লা জেলার প্রচার সচিব বেলাল হোসেন বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এটি দুঃখজনক ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জামাতে ইসলামি শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়, দেশের সাধারণ কোনও নাগরিককেও হেনস্তা করা সমর্থন করে না। এই দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা জামাত-ই- ইসলামির কোনও পর্যায়ের নেতা বা কর্মী নয়।''