সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশে। ছাত্র আন্দোলনের সময় রক্তাক্ত হয়েছে দেশের নানা প্রান্ত। আন্দোলন চলাকালে প্রাণ হারিয়েছিলেন সাংবাদিক তাহির জামান। এবার তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন আরও ৬ জন। পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে মুজিবকন্যার বিরুদ্ধে।
গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। এর পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ছাড়াও ইতিমধ্যে এক ডজনের বেশি হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবার সাংবাদিকের মৃত্যুর ঘটনাতেও খুনের মামলায় নাম জড়িয়েছে হাসিনার। এই মামলায় উল্লেখ রয়েছে, গত ১৯ জুলাই তাহির রাজধানী ঢাকার সাইন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে যান। সেই সময় ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে পুলিশ গুলি ছোড়ে। কিছুক্ষণ পর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের কয়েক ফুট দূরত্বে তাহিরের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ অনবরত গুলি ছুড়তে থাকায় তাহিরের দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় অন্যান্য অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, রমনা বিভাগের পুলিশের ডিসি আশরাফ ইমাম, এডিসি প্রশাসন ও নিউমার্কেট জোন হাফিজ আল আসাদ, সহকারী কমিশনার নিউমার্কেট জোন রেফাতুল ইসলাম রিফাত ও নিউমার্কেট থানার সাবেক ওসি মহম্মদ আমিনুল ইসলাম।
[আরও পড়ুন: ১৭ বছর পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সচল খালেদা জিয়ার, চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন বিদেশে]
এদিকে, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘটা হিংসার ঘটনা, প্রাণহানি এবং হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চায় রাষ্ট্রসংঘ। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। এর পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ডুজারিক বলেন, "ছাত্র আন্দোলনের সময় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘ সমস্ত মৃত্যুর ঘটনায় যারা জড়িত তাঁদের বিচার চায়। হিংসা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা দরকার।" জানা গিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে তদন্তে করার জন্য খুব শীঘ্রই ঢাকায় যাবে রাষ্ট্রসংঘের তদন্তকারী দল।