সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় গণমাধ্যমে যেভাবে বক্তব্য, বিবৃতি দিচ্ছেন, তা মোটেই পছন্দ করছে না বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এনিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে ভারত সরকারের কাছে। পাশাপাশি অনুরোধ করা হয়েছে শেখ হাসিনা যেন ভারতে বসে বক্তৃতা বা বিবৃতি না দিতে পারেন। তবে এনিয়ে নয়াদিল্লির তরফে কোনও উত্তর মেলেনি বলে খবর বাংলাদেশ সূত্রে। হাসিনার কণ্ঠরোধে 'মরিয়া' ইউনুস সরকারের এই ভূমিকায় নয়াদিল্লি ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেবে, সেদিকে নজর সবমহলের।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিদেশ মন্ত্রকে সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত বিবৃতি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মুখপাত্র তৌফিক হাসান। এদিকে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রকের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অফ) মো. জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী বলেছেন, ''ভারতের কিছু গণমাধ্যম প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ করে অপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, তারা এখন সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে মানুষ এখন সেটাকেও মিথ্যা রিপোর্ট বলবে। এর প্রতিকার হচ্ছে, এদেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে সত্যকে তুলে ধরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় শক্তি হলো এদেশের গণমাধ্যম।'' বৃহস্পতিবার বরিশাল পুলিশ লাইন্সে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তৌফিক হাসানের আরও বক্তব্য, ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পর কতজন আওয়ামি লিগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ভারতে অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বিদেশ মন্ত্রকে। ভারতের ভিসা না পাওয়ায় তৃতীয় দেশের ভিসাপ্রার্থীরা দিল্লির পরিবর্তে ভিয়েতনাম এবং পাকিস্তান থেকে ভিসা গ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি। হাসান বলেন, সুইজারল্যান্ডে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্থার ঘটনায় জেনেভা মিশনের একজন আধিকারিককে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং একজন কর্মীকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের অগাস্টে বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে এসে আশ্রয় নেন তিনি। এখনও সেখানেই রয়েছেন। এরই মধ্যে মাঝেমাঝে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ওদিকে হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিস জারি করার কথা জানিয়েছে ইউনুস সরকার। এর পর তাঁর 'কণ্ঠরোধে'ও মরিয়া মনোভাব প্রকাশ করল অন্তর্বর্তী সরকার।