সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে সম্প্রতি শতাধিক সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বা স্বীকৃতিপত্র বাতিল করা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই নিশানায় ছিল সংবাদমাধ্যম। বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি মামলা করা হয়েছে। হাজতবাসও করছেন কেউ কেউ। ফলে বাংলাদেশে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে। স্বীকৃতি বাতিলের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয় আমেরিকার বিদেশ দপ্তরের ওয়েবসাইটে।
হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ব্যুরো চিফ-সহ ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করে দেয় ইউনুস সরকার। সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। যা নিয়ে নানা জলঘোলা হয়েছে। কয়েকদিন আগেই সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় 'কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)' অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসকে চিঠি দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, "বিষয়টি আমি এখনও দেখিনি। যদি এমনটি হয় তবে তা দুঃখজনক। বাংলাদেশ-সহ যেকোনও দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যাবশ্যক। প্রেসিডেন্ট ও বিদেশমন্ত্রীর কাছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাংবাদিকদের অধিকার এবং স্বাধীনতা যথাযথভাবে সম্মান করার বিষয়টিকে আহ্বান জানাতে চাই।"
এদিকে, সিপিজের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত চিঠিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষাকে বাধ্যবাধকতা করার কথা বলা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের কাজের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়েছে। এই সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারকে সাহায্য করতে হবে। বিশেষ করে জেলে থাকা আওয়ামি লিগ সমর্থক চার সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের ক্ষেত্রে যেন যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। তাঁরা যেন সঠিক বিচার পান।
উল্লেখ্য গত ৬ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। এর পর থেকে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। আর মোজাম্মেল বাবু সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২১ আগস্ট ফ্রান্সে যাওয়ার চেষ্টার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাকে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় ৫২ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।