সুকুমার সরকার, ঢাকা: হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বাড়ছে বলে অভিযোগ সর্বস্তরে। শুধু অবশ্য অভিযোগই নয়, হিন্দুদের উপর হামলার একাধিক নিদর্শন এসেছে প্রকাশ্যে। মন্দির, পুজোমণ্ডপে হিংসাত্মক ঘটনাও ঘটেছে। এসব নিয়ে ভারতের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসকে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। এবার বাংলাদেশের হিন্দুরাই পথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হলেন। চট্টগ্রামে হাজার হাজার সংখ্যালঘু জমায়েত করে গর্জে উঠলেন, আর সহ্য করা হবে না অত্যাচার।
শুক্রবার অর্থাৎ গত ১ নভেম্বর এই প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হন চট্টগ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়। তাঁদের প্রতিবাদ মিছিলে যাতে কোনও হামলা হতে না পারে, তার জন্য বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ছিল পাহারায়। মিছিলে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তির কথায়, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ইউনূস সরকার সংখ্যালঘুদের উপরে হওয়া অত্যাচার স্বীকারই করতে চায় না। আমরা বুঝতে পারছি, তাদের উপরে কী অত্যাচার হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর, দোকান, মন্দির - সব জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দিন কয়েক আগেই চট্টগ্রামে একটি মিছিলে বাংলাদেশের পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা ওড়ানোর অভিযোগে ১৯ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা হয়, যা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তপ্ত এলাকা। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ও ইসকন প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে। ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি সকলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন। তার প্রতিবাদে হাজার হাজার হিন্দু পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান।
গত আগস্টে বাংলাদেশে বড়সড় রাজনৈতিক পালাবদলের পর ড. মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীন। ফলে অত্যাচার-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। এবার সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে দিকে দিকে গর্জে উঠছেন তাঁরা।