সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এদেশের মসনদে তখন ইন্দিরা গান্ধী। অন্যদিকে, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই চলছে পূর্ব পাকিস্তানের। সেদিন যদি ইন্দিরা না থাকতেন, ভারত যদি মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে না দাঁড়াত তাহলে পৃথিবীর মানচিত্রে আজকের বাংলাদেশের নাম থাকত কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ইতিহাসবিদদের। সেদিন পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য। কিন্তু আজ ভারতের এই অবদানকেই অস্বীকার করছে মহম্মদ ইউনুসের 'নতুন' বাংলাদেশ! নতুন পাঠ্যবইতে হ্রাস করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা। সরানো হয়েছে মুজিব ও ইন্দিরার ছবি। পাশাপাশি মুছে দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ। পাঠ্যক্রমে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকাও।
বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিবিটি) ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে নানা পরিবর্তন করা করেছে। বোর্ডের দাবি, নতুন বইয়ের মাধ্যমে দেশের ইতিহাস নতুনভাবে জানবে পড়ুয়ারা। জানা গিয়েছে, নতুন পাঠ্যপুস্তকে মুছে ফেলা হয়েছে শেখ হাসিনার ছবি। এতদিন বইতে পিছনের পাতায় পড়ুয়াদের প্রতি হাসিনার বার্তা ছাপা থাকত। কিন্তু নতুন বইতে তা আর নেই। বদলে জায়গা পেয়েছে 'জুলাই আন্দোলনে'র নানা ছবি।
এদিকে, উল্লেখযোগ্যভাবে বইতে নেই মুজিব ও ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার ঐতিহাসিক ছবি। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার এক সমাবেশে যৌথ ভাষণ দিয়েছিলেন ইন্দিরা এবং মুজিব। এছাড়া সেই বছরেরই ১৭ মার্চ ঢাকায় ইন্দিরাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এই দুই ছবি আজও ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল। কিন্তু বদলের বাংলাদেশের নতুন বই থেকে বাদ পড়েছে এই দুই ছবি। অন্যদিকে, নতুন পাঠ্যক্রমে মুজিবের কথা থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর ভূমিকার কথা হ্রাস করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউনুসের আমলে বাংলাদেশে স্কুলস্তরের পাঠ্যসূচি বদল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল। গত জানুয়ারি মাস থেকে তা বাস্তবায়িত হয়। শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। নতুন বইতে দেখা গিয়েছে, দেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে একা মুজিবুর রহমান নন, আরও তিনজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষক এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দি এবং শেখ মুজিবর রহমান। এক্ষেত্রে মুজিবের গুরুত্ব কমিয়ে ফেলার মধ্যে দিয়ে তাঁর নামই মুছে ফেলতে তৎপর হাসিনা পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার, তা স্পষ্ট।
