নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: ২০২০ সালে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ। এবার ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ে স্থগিতাদেশ চাইল ইউনুস সরকার। পাশাপাশি ১৫ আগস্টকে ‘জাতীয় শোক দিবস' ঘোষণার বিরুদ্ধেও আবেদন করল রাষ্ট্রপক্ষ। সোজা ভাষায় বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হতে চলেছে 'জয় বাংলা' স্লোগান এবং ‘জাতীয় শোক দিবস'। কার্যত মুজিবকে মুছে ফেলতে তৎপর ইউনুস।
সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানান, আগামী রবিবার, ৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হবে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ মার্চ দুই বিচারপতি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেন। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বাংলায় দেওয়া রায়ে বলা হয়, "আমরা ঘোষণা করছি যে জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।" এর পর ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয় শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। এখন সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করল অন্তর্বর্তী সরকার।
অন্যদিকে ১৫ আগস্টকে ‘জাতীয় শোক দিবস' ও ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রবিবার আপিলের অনুমতি দিয়ে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিন ১৫ আগস্টকে 'জাতীয় শোক দিবস' এবং সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
পরে ২০০২ সালে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে 'জাতীয় শোক দিবস' এবং সরকারি ছুটির সিদ্ধান্তটি বাতিল হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে আওয়ামি লিগ সমর্থিত তিনজন আইনজীবী রিট পিটিশন দাখিল করলে হাইকোর্ট বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতিরা। সেই রায়ের বলে এখনও ১৫ আগস্ট 'জাতীয় শোক দিবস' হিসাবে পালিত হয় এবং সরকারি ছুটির সিদ্ধান্তও বহাল রয়েছে। সম্প্রতি হাইকোর্টের ওই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিলের আবেদনের করে ইউনুস সরকার। সব মিলিয়ে হাসিনার পতনের পরবর্তী বাংলাদেশে প্রধান টার্গেট 'বঙ্গবন্ধু' মুজিবুর রহমান।বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তাঁকে মুছে ফেলতে চাইছে মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার।