সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুজিব মুছছে 'নতুন' বাংলাদেশ। দিকে দিকে ভাঙচুর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিবের ধানমন্ডির বাড়ি। এমনকী মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা বদলে ফেলছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার। এছাড়া পাঠ্যবইতে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকেও খাটো করে দেখানো হচ্ছে। যা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে ইউনুসকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেখানে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান কতটা।

আজ ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। এই দিনে পড়শি দেশের সকল নাগরিককে শুভেচ্ছা জানিয়ে ইউনুসকে বার্তা দেন মোদি। চিঠিতে তিনি লেখেন, 'বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই দিনটি আমাদের দু'দেশের ইতিহাস এবং ত্যাগের প্রতীক। এই দিনটিই আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সম্পর্কের জন্য একটি পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে চলেছে। যা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বিকশিত হয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের জন্যও এই দিনটি ঐতিহাসিক। শান্তি, স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধির জন্য এবং একে অপরের স্বার্থ ও উদ্বেগের প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে এই অংশীদারিত্বকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।' অর্থাৎ এই বার্তায় ইউনুসকে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব ও ভারতের অবদান স্মরণ করিয়ে দিলেন মোদি।
১৯৭১ সালে ভারতের মসনদে তখন ইন্দিরা গান্ধী। অন্যদিকে, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই চলছে পূর্ব পাকিস্তানের। সেদিন যদি ইন্দিরা না থাকতেন, ভারত যদি মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে না দাঁড়াত তাহলে পৃথিবীর মানচিত্রে আজকের বাংলাদেশের নাম থাকত কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ইতিহাসবিদদের। সেদিন পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য। কিন্তু আজ ভারতের এই অবদানকেই অস্বীকার করছে ইউনুসের বাংলাদেশ। নতুন পাঠ্যবইতে খাটো করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা। সরানো হয়েছে মুজিব ও ইন্দিরার দুই ঐতিহাসিক ছবি। পাশাপাশি মুছে দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ। পাঠ্যক্রমে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিবের ভূমিকাও।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-সহ শয়ে শয়ে নেতার মুক্তিযুদ্ধের সনদ বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে ইউনুস সরকার। মুক্তিযোদ্ধা কারা, সেই সংজ্ঞাই বদলে ফেলা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিবৃত করার চেষ্টা চলছে ‘নতুন বাংলাদেশে’। তাই তো মুজিব মুছতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হলের নাম রাখা হয়েছে ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে এক কুখ্যাত গণহত্যাকারী রাজাকারের নামে। ঢাকার রাস্তায় ঘুরতে দেখা যাচ্ছে হিজবুত তাহরিরের জঙ্গিদের। দাঁত-নখ বের করেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম। বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন করে যারা আসল রাজাকার তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে প্রমাণ করতে চাইছে ইউনুস সরকার।