সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার মাস আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে এখন তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। এই বড় রাজনৈতিক পালাবদলের পর মুজিবকন্যা হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামি লিগের নজর ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উপর। এই ভোটে দুরন্ত জয় পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সাফল্যের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানালেন হাসিনা। তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছে আওয়ামি লিগ। পাশাপাশি ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসও।
মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর শুভেচ্ছার বন্যার ভাসছেন ট্রাম্প। আজ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে আওয়ামি লিগ লেখে, 'আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। ট্রাম্পের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকে বসেছেন তিনি। সেই স্মৃতিচারণা করেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর আশা দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের আসনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বসার পর আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। শেখ হাসিনার আশা করছেন ফের একবার তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন।" তাহলে কি ট্রাম্পের জয়ে সুদিন ফিরে পাওয়ারই আশা করছেন মুজিবকন্যা?এদিকে ময়দানে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসও। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনিও আগামী দিনে দুদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমবার মুখ খোলেন ট্রাম্প। দীপাবলি উপলক্ষে বিশেষ বার্তা দিয়ে তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চলছে বাংলাদেশে। লাগাতার আক্রমণ করে লুটপাট চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। সবমিলিয়ে চূড়ান্ত অশান্তি। আমার নজরে থাকলে এমনটা কখনই হতে পারত না।' সঙ্গে সাফ জানিয়েছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস বারবার উপেক্ষা করেছেন হিন্দুদের। আমেরিকার হিন্দুদের সুরক্ষিত রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন ট্রাম্প। তাঁর এহেন মন্তব্যের পরই নানা মতামত রাখেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেন রিপাবলিকান নেতা। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে একাধিকবার তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, বাইডেন-কমলার ভুল সংশোধন করবেন। তার পর থেকেই চর্চা শুরু হয়, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে কি বাংলাদেশের ‘হাল ফেরাতে’ উদ্যোগী হবেন ট্রাম্প?
প্রসঙ্গত, ইউনুসের সঙ্গে রিপাবলিকান পার্টির সেভাবে সদ্ভাব নেই। সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন সফরে গিয়েছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। সেসময়ে বিল ক্লিন্টন ভূয়সী প্রশংসা করেন ইউনুসের। তার পর থেকেই অনেকে মনে করেন, ইউনুসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আওয়ামি লিগ সরকারকে ‘উৎখাত’ করেছে ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু রিপাবলিকান শিবিরের সঙ্গে ইউনুসের সেভাবে সখ্য নেই। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে পারেন ট্রাম্প। তার ফলে হাসিনার প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে পদ্মাপারে, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।