সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'জয় বাংলা' স্লোগান বললে নেমে আসছে শাস্তির খাঁড়া। ভাঙচুর হচ্ছে মন্দিরে। প্রশাসনের অনুমতি সত্ত্বেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লালন স্মরণোৎসব ও বসন্ত উৎসব। এভাবেই বদলের বাংলাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মৌলবাদীরা। এবার তাদের কোপ পড়েছে ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে। প্রেম দিবসে ফুল বিক্রি করার জন্য দোকান ভাঙচুরে অভিযোগ উঠল দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রেস্তরাঁতেও গিয়েও শাসাতে দেখা যায় তাদের।
বাংলাদেশের একাদিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গতকাল এই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এলাকায়। প্রেম দিবস উপলক্ষে সেখানে একটি দোকানে ফুল বিক্রি হচ্ছিল। ভালোবাসার মানুষকে দেওয়ার জন্য অনেকেই সেখান থেকে ফুল কিনছিলেন। অভিযোগ, এই দেখেই গায়ে জ্বালা দিয়ে ওঠে অনেকের। দোকানের সামনে গিয়ে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের ‘ভালোবাসা দিবস; ভালোবাসা দিবস; চলবে না এখানে’, ‘প্রেমিক-প্রেমিকার গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন রেস্তরাঁর সামনে গিয়েও বিক্ষোভ করতে দেখা যায় হামলাকারীদের।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার আলম অভিযোগ করে বলেন, "দোকানে ফুল বিক্রি করি দীর্ঘদিন ধরে। শুক্রবার বিকেলে কিছু লোকজন এসেই দোকানে ভাঙচুর করে ফুলগুলো রাস্তায় ফেলে দেয়। ভালোবাসা দিবসে কেন ফুল বিক্রি করছি সেটাই অপরাধ। আরেকটি দোকান ভেঙেছে তাও কিছু বলিনি। আগের দিন তারা ফুল বিক্রি করতে নিষেধ করে গিয়েছিল।" এদিকে, এই পরিস্থিতির জেরে আজ শনিবার ভূঞাপুরে উদীচীর বসন্তবরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উদীচী ভূঞাপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মেহেদী হাসান জানান, ভালোবাসা দিবসের বিভিন্ন ঘটনার কারণে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে বসন্তবরণের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে বসন্তবরণ অনুষ্ঠান করা হবে।
কিন্তু ফুলের দোকানে ভাঙচুরের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানান ভূঞাপুর থানার ওসি একেএম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়টি জানা নেই। এছাড়া ভাঙচুরের বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে ব্যাপক হারে হিন্দু নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। দুর্গাপুজোর সময়ও পুজো কমিটিগুলোকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারপর একাধিক জায়গায় কালী মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। গত বছর নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী লালন মেলাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবার হেফাজতে ইসলামের আপত্তির জেরে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় বন্ধ হয়ে যায় লালন স্মরণোৎসব।
