সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতে আল কায়দার হয়ে কাজ করত ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ খুনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেহাদি ফয়সল। অসমে ভুয়ো পরিচয় নিয়ে জঙ্গি সংগঠনটির কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলেছিল সে। এবার প্রকাশ্যে এসেছে এমনই চঞ্চল্যকর তথ্য। ১ জুলাই বেঙ্গালুরুর বোম্মনাহাল্লিতে ওই বাংলাদেশি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করতেই ফাঁস হচ্ছে একের পর এক তথ্য।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ (Bangladesh) কুপিয়ে খুন করা হয় মুক্তমনা ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে। ওই ঘটনার পরই সিলেট সীমান্ত হয়েই মূল অভিযুক্ত ‘আনসারুল্লা বাংলা টিমের’ (এবিটি) নেতা ফয়সল আহমেদ অসমের শিলচরে পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আল কায়দার হয়ে কাজ করে সে। বরাক উপত্যকায় ফয়সলের নেতৃত্বে সংগঠনটির অসম মডিউল ঘাঁটি মজবুত করেছে। হত্যাকাণ্ডের সময় ফয়সাল ছিল ডাক্তারির ছাত্র। ওই সময় সে জড়িয়ে পড়ে আল কায়দার ছায়া সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের সঙ্গে। বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়াশোনার আড়ালে জেহাদি মতাদর্শ ছড়িয়েছে ফয়সল। তার কাছে যে পাসপোর্ট পাওয়া গিয়েছে, সেখানে অসমের কাছাড় ঘেঁষা মিজোরামের একটি ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে সে ড্রাইভিং লাইসেন্সও বাগিয়ে নেয়। শাহিদ মজুমদার নামে শিলচর থেকে বানায় ভুয়ো ভোটার কার্ড।
[আরও পড়ুন: ‘হাজারটা পদ্মা সেতু করেও লাভ নেই’, হাসিনা সরকারকে তোপ বিএনপি মহাসচিবের]
কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে ফাঁকি দিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেনি জঙ্গি ফয়সল। ১ জুলাই বেঙ্গালুরুর বোম্মনাহাল্লিতে ওই বাংলাদেশি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ৩ জুলাই তাকে কলকাতা আনা হয়। দ্রুত ফয়সলকে বংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ডিআইজি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, ফয়সল যে পালিয়ে গিয়ে ভারতে গা ঢাকা দিয়েছে, সেটা তারা আগেই জানতেন। তাই ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল।বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে মনিটরিংও করছিল। ভারতকে প্রয়েজনীয় নথিও দেওয়া হয়। বাংলাদেশের দেওয়া তথ্যে নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেটের সুবিদবাজারের নূরানী আবাসিক এলাকায় খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। অনন্ত ছিলেন পেশায় ব্যাংকার। পাশাপাশি, বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির সঙ্গে ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন অনন্ত। ছিলেন স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চেরও সংগঠক। অনন্ত হত্যা মামলার রায়ে গত ৩০ মার্চ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। তাদের মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার খালপাড় তালবাড়ির ফয়সল আহমেদ (২৭) একজন।