স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। গত তিনদিনে কলকাতার প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতালে কমছে বাংলাদেশের রোগীর সংখ্যা। এমনকী ই-মেল করিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘দেশের অবস্থা ভাল নয়। এখনই চিকিৎসা করাতে আসতে পারব না।' ফলে কিছুটা হলেও চিন্তায় হাসপাতালগুলি।
খাস কলকাতার পিয়ারলেস রুবি জেনারেল এবং ডিসান হাসপাতালের পরিচালনকর্তারা এমনটাই জানাচ্ছেন। এর মধ্যেও যাঁদের কাল-পরশুর মধ্যে ছুটি পাওয়ার কথা চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ভিসা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যভবন মারফত বাংলাদেশ উপ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সেক্ষেত্রে সবধরনের সাহায্য করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পিয়ারলেস হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত রায়ের কথায়,"সোমবার ১২৯ জন বাংলাদেশের রোগী আউটডোরে চিকিৎসা করিয়েছেন। মঙ্গলবার তা কমে হয়েছে ৮৮ জনে। আশঙ্কা, কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে।" সুদীপ্তবাবুর কথায়,"শুধু রোগীর চিকিৎসা করাই নয়। সামাজিক দায়বদ্ধতাও আছে। তাই আমি নিজেই স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে কথা বলেছি। উপ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে তাঁদের দ্রুত বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। হাসপাতাল থেকে ই-মেল, ফোন করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। অন্তত এমন অবস্থায় আমরা যে তাঁদের পাশে আছি এমন বার্তা দেওয়া হচ্ছে। বাড়িঘর ছেড়ে তাঁরা ভারতে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। বোঝা যায় রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছেন।"
[আরও পড়ুন: ‘জুতো খুলে মারব…’ ভিড় জনতার সামনে সরকারি আধিকারিককে হুমকি বিজেপি বিধায়কের!]
বাইপাসের ধারে ডিসান হাসপাতালের পক্ষে সুরজিৎ ঘোষ বলেন, "আউটডোরে রোগী অর্ধেক হয়েছে। ইন্ডোরে তিনজন ভর্তি। বেশিরভাগ রোগী বাংলাদেশ থেকে ই-মেল করে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা পিছিয়ে দিচ্ছেন।" সুরজিৎবাবুর কথায়, "এটা তো এক-আধদিনের ব্যাপার নয়। অন্তত একমাসের প্রস্তুতি নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আসেন। কিন্তু দেশের অবস্থাই যদি উদ্বগজনক হয় তবে চিকিৎসা করাতে আসবেন কী করে।" স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগীর কথায়, "যেসব হাসপাতাল প্রতিবেশী দেশের জন্য তথ্য পাঠিয়েছে, নিয়ম মেনে উপ-হাই কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে দ্রুত দেশে ফেরা যায়।"
মণিপাল হাসপাতালও বাংলাদেশের রোগীদের সম্পর্কে তথ্য জানিয়েছে। মণিপালের তরফে প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, ঢাকুরিয়া ব্রডওয়ে এবং মুকুন্দপুর হাসপাতালে আপাতত ৩৭ জন বাংলাদেশের রোগী চিকিৎসাধীন। বেশিরভাগই মাসের প্রথম সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন। মঙ্গলে নয়জন ভর্তি হয়েছেন। এক রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। একমাসের ভিসা নিয়ে এসেছেন। বাড়ি ফেরার দিনও আগে থেকে স্থির হয়ে আছে। কিন্তু বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁদের আত্মীয়স্বজন।