সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ফেসবুকে (Facebook) পরিচয়। প্রেমিকের টানে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন যুবতী। বিয়ে করে দিব্যি সংসারও করছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অনুপ্রবেশের (Infiltration) অভিযোগে বর্ধমান থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশি এক তরুণীকে। তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলা বাজার এলাকার এক যুবকও। গ্রেপ্তারের পর ধৃতরা প্রেমের গল্পের কথা শোনালেও তা বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না তদন্তকারীরা। ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
ধৃত বাংলাদেশি (Bangladesh) যুবতীর নাম নূরতাজ আখতার মিম। বছর আঠেরোর নূরতাজের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের এনায়েতনগরে। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শেখ শামিম নামে বর্ধমানের এক যুবককে। ধৃতদের রবিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃতদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। নূরতাজের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের মাধ্যমে তাঁর দেশে খবর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) অতনু ঘোষাল বলেন, “বিদেশি আইন মেনেই যা করার সেটা করা হবে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে অনৈতিকভাবে শেখ শামিম ওই মহিলাকে এই দেশে নিয়ে এসেছে। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” কেন ওই তরুণীকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল, সেই বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম সংস্থার মূল পাইপলাইন থেকে তেল চুরি! বর্ধমানে গ্রেপ্তার ২]
জানা গিয়েছে, কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে শনিবার বর্ধমান থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে জানানো হয়, নূরতাজ আখতার মিম ও নাদি আখতার নামে দুই বাংলাদেশি মহিলাকে ভুল বুঝিয়ে বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজার ও লস্করদিঘি এলাকায় নিয়ে এসে আটকে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে তাদের এখানে বিক্রি করা হয় বলেও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অভিযোগে জানিয়েছে। এরপরেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নূর আখতার মিমের হদিশ পায়। তেঁতুলতলা বাজার এলাকার একটি বাড়িতে তাকে পায় পুলিশ। নূরতাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে বাংলাদেল থেকে কোনও পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়াই এদেশে ঢুকেছিল। জেরায় নূরতাজ দাবি করে, মাস তিনেক আগে ভারতে এসেছে। শামিমকে বিয়ে করেছে মুসলিম মতে। স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই এখানে বসবাস করছিল।
[আরও পড়ুন: বীরভূমের পর পূর্ব মেদিনীপুর, বোমা বাঁধতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেপ্তার যুবক]
এদিকে শামিম দাবি করছে, ফেসবুকে তার সঙ্গে নূরতাজের পরিচয় হয়েছিল। সেখান থেকেই প্রেম। নূরতাজকে নিয়ে এসে বিয়ে করে মুসলিম ধর্ম মেনেই। তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই বসবাস করেছে। নূরতাজকে তার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা শেখ জিন্নার আলি দাবি করেছেন, তাঁদের কাছে খবর এসেছিল বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন মেয়েকে বিক্রি করা হয়েছে। নূরতাজ আকতার মিম ও নাদি আকতার বর্ধমানে আছে, জানতে পেরে সেটা বর্ধমান থানায় লিখিতভাবে জানান তাঁরা। বর্ধমান থানা নূরতাজ আকতার মিমকে উদ্ধার করলেও আর একজনের সন্ধান পায়নি।