দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: কাশ্মীরি শাল বিক্রেতার হাত ধরে রাজ্যে কাশ্মীরি জঙ্গি! ক্যানিং থেকে পাক জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের সদস্য গ্রেপ্তার হতেই প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য। ধৃতের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক বছর যাবত জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ক্যানিংয়ের হাসপাতাল মোড়ে এক শাল বিক্রেতার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল সে।
শনিবার রাতে ক্যানিং হাসপাতাল মোড় থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে শ্রীনগরের বাসিন্দা জাভেদ মুন্সি। জানা গিয়েছে, এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিল সে। সেই তদন্ত শুরু করতেই উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে শীতের সময় গোলাম মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি ক্যানিংয়ে শাল বিক্রি করতে আসতেন। মাসখানেক ধরে স্থানীয় মুনাব্বর পিয়াদা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। শাল বিক্রেতার সঙ্গে থাকতেন তার স্ত্রী তবসুম বিবি। শুক্রবার সেই ঘরেই আসেন গোলামের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। স্থানীয় মানুষরা বহু পুরনো শাল বিক্রেতা বলে সেই ভাবে আর সন্দেহ করতেন না। আদপে সেই আত্মীয়ই হল তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের সদস্য জাভেদ মুন্সি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের বিরুদ্ধে জম্মু কাশ্মীর এলাকায় বেশ কয়েক বছর যাবত জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, এসটিএফ এবং ক্যানিং থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে পাকড়াও করে কাশ্মিরী জঙ্গিকে।
বাড়ির মালিক মুনাব্বর পিয়াদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, "সাত মাসের চুক্তিতে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। দশ টাকার সরকারি স্ট্যাম্প পেপারে তা লেখা আছে। প্রত্যেক মাসে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যেই দুমাসের টাকা অগ্রিম দিয়েও দিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে শাল বিক্রেতা ক্যানিংয়ে শালের ব্যবসা করতে আসে শীতকালে। সেই হিসেবে আমরা ভাড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা কী করে বুঝব তাদের পরিবারের সঙ্গে জঙ্গিযোগ আছে!"
এলাকায় জঙ্গি ধরা পড়ায় যথেষ্ট আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন। শাল বিক্রেতার সঙ্গে জঙ্গিযোগের কথা শুনে হতবাক স্থানীয় মানুষজনও। তাঁরা বলেন, "আমরা মাঝেমধ্যে ওদের বাড়িতে শাল কিনতে যেতাম। কয়েকদিন ধরে কালো, বেটে এক যুবককে দেখছিলাম। তবে সেও কথা বলতো না বলে আমরাও কথা বলতাম না।" তবে পুলিশ সূত্রে খবর শুক্রবার ওই যুবক আসে ক্যানিংয়ে। তারপর ওই বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ধৃত জঙ্গি জাভেদ মুন্সি দূর সম্পর্কের আত্মীয় বিক্রেতা গোলাম মোহাম্মদের। ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।