সুকুমার সরকার, ঢাকা: মীরপুরের রাজবাড়ির গ্রাম থেকে সুদূর সুইজারল্যান্ডের (Switzerland) সংসদে সফল যাত্রাপথ। সুইজারল্যান্ডে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের কন্যা সুলতানা খান। প্রথমবারের মতো কোনও বাংলাদেশি সংসদ সদস্য (MP) পেল সুইজারল্যান্ডের সংসদ। দেশটির জুরিখ জোন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি (Bangladesh) সুলতানা খান সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিতদের মধ্যে সুলতানা খান তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
সুলতানা খানের জন্ম ঢাকার মিরপুরে, গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। বাবার নাম এসএম রুস্তম আলি, মা রাজিয়া সুলতানা। পাঁচ ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। ঢাকা সিটি কলেজ (Dhaka City College) থেকে স্নাতক এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পর ২০০৪ সাল থেকে তিনি সুইজারল্যান্ডে। স্বামী প্রবাসী সাংবাদিক, সংগঠক এবং ব্যবসায়ী বাকি উল্লাহ খান এবং দুই ছেলে-সহ সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে বসবাস করছেন তিনি। সেখানে সুলতানা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সামাজিক ও পরিবেশকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। সুইজারল্যান্ড এবং ইউরোপে বাংলাদেশের শিল্প ও সাহিত্য চর্চার জন্য ‘বাংলা স্কুলের’ অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। পরিচালনা পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন সুলতানা।
[আরও পড়ুন: ‘টিকার নামে মুলো দেখাচ্ছে সবাই’, ভ্যাকসিনের অভাবে ক্ষোভপ্রকাশ বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর]
প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে উচ্ছ্বসিত সুলতানা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি প্রথমেই ধন্যবাদ দিতে চাই এখানে বসবাসকারী সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের, যাঁরা আমার উপর আস্থা রেখেছেন। সুইজারল্যান্ডের জনগণ, যাঁরা আমাকে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য ভোট দিয়েছেন তাঁদেরও অশেষ ধন্যবাদ। আমার এই অর্জন তাঁদের সবার জন্য।” সংসদের বিশেষ অধিবেশনে নারী সাংসদ হিসেবে নারী অধিকার রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবেন জানিয়ে সুলতানা বলেন, ‘‘নারী অধিকারের বিষয়ে কথা বলার পাশাপাশি আমার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষা এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা। আমি সুইজারল্যান্ডে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ স্থাপনের প্রস্তাব রাখব, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ এখানে এলে বাংলাদেশের গৌরবের ইতিহাস জানতে পারেন।” তিনি আরও বলেন, ”আমি বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নেও কাজ করতে চাই। দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। তাঁরা পিছিয়ে থাকলে দেশের উন্নয়ন কোনওভাবেই সম্ভব নয়।” সুলতানা খানের এই অর্জনে সুইজারল্যান্ডে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিসহ স্থানীয় নাগরিকগণ অভিবাদন জানিয়েছেন। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শুভানুধ্যায়ী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছাবন্যায় ভাসছেন সুলতানা খান।