shono
Advertisement

করোনা টিকা আমদানিতে তৎপরতা, সেরামকে ৬০০ কোটির ব্যাংক গ্যারান্টি দিল বাংলাদেশ

আগামী মাসের মধ্যে বাংলাদেশে টিকা পাঠাবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট।
Posted: 01:42 PM Jan 03, 2021Updated: 01:42 PM Jan 03, 2021

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিড-১৯’এর (COVID-19) টিকা কেনার জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে ৬০০ কোটি টাকা জমা দিচ্ছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে খবর, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম অগ্রিম টাকা হিসেবে এই ৬০০ কোটি টাকা এখন নেবে এবং বাকি অর্থ টিকা সরবরাহ শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশের কাছ থেকে পাবে। সব ঠিকঠাক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনতে পারবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মহম্মদ খুরশিদ আলম। শনিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। সুতরাং ভারতের ওই টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে টিকা আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

Advertisement

বাংলাদেশ সরকারের তরফে আগেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট (SII) ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি হয় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য। চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম যদি আগামী জুনের মধ্যে চাহিদামতো টিকা সরবরাহ করতে না পারে, তাহলে বাংলাদেশ অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে খুরশিদ আলম বলেন, ”যে কোনও টিকার দুটি দিক রয়েছে। একটি হল টিকা দেশে আনা এবং দ্বিতীয়টি হল সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই ব্যাপারে অনেক আইনি বাধ্যবাধকতা আছে, অনেক রকম আইনও আছে। তবে এটা যাতে সরাসরি ক্রয় করা যায়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অনুমোদন দিয়েছেন। টিকা আনার পর সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেন মেনটেন করতে হবে। তার জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে অধিদপ্তর। জেলায় যেসব জায়গায় কোল্ড চেন মেনটেন করার ক্ষমতা আছে, সেই জায়গাগুলোতে তারা পৌঁছে দেবে।”

[আরও পড়ুন: হায় মুজিব! বাংলাদেশে ফের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর]

করোনা টিকা (Corona vaccine) ভারত থেকে বাংলাদেশে পৌঁছনোর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কোল্ড চেনের মাধ্যমে তা যথাযথ সংরক্ষণ করা। প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য সারা দেশে ২৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী এবং পরিদর্শক কাজ করবেন বলে খবর। কয়েকদিনের মধ্যে তাঁদেরও প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে যাবে। এদিকে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) রাব্বুর রেজা বলেন, ”টিকা ভারত থেকে আনার পর কোল্ড চেন টঙ্গিতে তাদের দুটি ওয়্যারহাউস নেওয়া হবে। এরপর সরকার অনুমোদিত ওয়্যারহাউসগুলোতে আমরা পৌঁছে দেব। এই ডেলিভারির মধ্যে দিয়ে বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হবে। এরপর শুরু হবে বিতরণ প্রক্রিয়া, যেটি হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।” চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম ইনস্টিটিউট ছ’মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। প্রতি মাসে ৫০ লক্ষ টিকা ভারত থেকে বাংলাদেশে পৌঁছবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা টিকা পাবেন, তার প্রাথমিক তালিকা ইতিমধ্যে তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বাংলাদেশে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনের মূল্য ধার্য করা হয়েছে ৪২৫ টাকা। এদিন তেমনই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ভারতে এই দাম আড়াইশো টাকার আশেপাশে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘করোনা ভ্যাকসিনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেক দেশের তুলনায় কম দামে অল্প সময়ে ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের অর্ডার নিশ্চিত করা হয়েছে।” স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, ‘‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য এবং সে দেশে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এছাড়া ভারতও অনুমোদন দিয়েছে। আমাদের ঔষধ নীতি অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সাতটি দেশ ও প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন থাকলে সেই ওষুধ বাংলাদেশে ব্যবহার করা যাবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement