রাহুল চক্রবর্তী: সকাল থেকে মোবাইলে জন্মদিনের শুভেচ্ছার ঢেউ। কেউ দীর্ঘায়ু কামনা করছেন। কেউ আবার সুস্থ-নীরোগ থাকার বার্তা দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, “আশিতে পা দিয়ে আপনি এমনি থাকুন।” আবার শতায়ু হওয়ার কামনা করে কারও শুভেচ্ছা, এমনই স্পষ্টবাদী থাকুন বাকি জীবনটাও। এভাবেই জোরালো ভাষণে মাতিয়ে রাখুন বিধানসভা।
[এটিএমে নকল কি-প্যাড! নিরাপত্তারক্ষীর তৎপরতায় রক্ষা পেলেন ব্যাংকের গ্রাহকরা]
ফোনটা এসেছিল তার মধ্যেই! রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এটিএম জালিয়াতির পর যে ‘গুণধর’-দের খোঁজে ছানবিন চালাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাও আবার একজন বিধায়ককে! বিধানসভা ভবনের মধ্যেই। শুক্রবার ছিল হাওড়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদারের আশিতম জন্মদিন। সকাল থেকেই ফোন করে অসংখ্য মানুষ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউ আবার ফুলের তোড়া হাতে হাজির হয়েছেন বাড়িতে। শুভেচ্ছা-চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এমন দিনেই তাঁকে ব্যাংক জালিয়াতদের ফোন করার ঘটনায় শোরগোল বিধানসভায়। একটি বৈঠকে যোগ দিতে এদিন বিধানসভা ভবনে আসেন প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক। দুপুর তিনটে নাগাদ মোবাইলে একটি ফোন আসে। প্রথমে ভেবেছিলেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে চাইছেন কোনও পরিচিতজন। সেই ভেবে ফোন ধরতেই হোঁচট খেতে হল প্রবীণ বিধায়ককে। ওপাশ থেকে ভেসে আসে- “স্টেট ব্যাংক থেকে বলছি। আপনার এটিএম কার্ডটা নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্লক করা হয়েছে। আপনি যদি আনব্লক করতে চান, তবে পিন নম্বরটা বলতে হবে।”
[OMG! মাত্র ৪৫ সেকেন্ডেই এটিএম থেকে গ্রাহকদের তথ্য চুরি!]
দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে ছাত্র পড়িয়ে ১৯৯৫ সালে জাতীয় শিক্ষকের সম্মান পাওয়া, তীক্ষ্ণধী বিধায়কের বিষয়টা বুঝতে সময় লাগেনি। কারণ বেশ কিছুদিন ধরে এটিএম জালিয়াতির যে খবরে হইচই চলছে কলকাতা থেকে জেলাজুড়ে, তা সবিস্তারে ব্রজমোহনবাবুর কাছে ছিল। তাই গলায় ফিরে এল ফেলে আসা দিনগুলোর সেই বিখ্যাত বজ্রকঠিন স্বর। যে আওয়াজে ছাত্রদের বুক কেঁপে উঠত একদিন। বিধায়কের কথায়, “ও প্রান্তের কথাটা শুনে দ্বিতীয়বার জানতে চাইলাম, কোথা থেকে বলছেন? কী ব্যাপার?” জবাবে শোনা যায় ফের আগের কথাগুলোই। ব্রজমোহনবাবু জানাচ্ছেন, “যখনই বলল, এটিএম ব্লক হয়ে গিয়েছে, তখনই সব বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে গেল। আরে! আমার তো এটিএম কার্ডই নেই! তার আবার ব্লক কী?”
তারপর? বিধায়ক বলছেন, “এবার একটু কড়া স্বরেই বললাম, কী নাম তোমার হে? কোন ব্রাঞ্চ? ব্যাংকের ম্যানেজার কে? বার দুয়েক এভাবে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের নাম জিজ্ঞাসা করতেই ফোনটা কেটে গেল।” ব্রজমোহনবাবুর কথায়, “জন্মদিনে ভুয়ো ফোন আসাটা হয়তো কাকতালীয়। আবার এটাও ঠিক যে, আমার এটিএম কার্ড নেই বলে রক্ষা। কিন্তু যাঁদের আছে, সেই সমস্ত গ্রাহকদের আরও সতর্ক হতে হবে। সচেতন থাকতে হবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে।”
[কানাড়া ব্যাংকের পর এবার অ্যাক্সিস ব্যাংক, জালিয়াতির শিকার রেডিও জকি]
The post জন্মদিনের শুভেচ্ছার মধ্যেই ব্যাংক জালিয়াতের ফোন! কী করলেন বিধায়ক? appeared first on Sangbad Pratidin.