টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবিরে জয়েন্ট বিডিওর গাড়ি আটকে জানলার কাঁচ বেয়ে একজন একটানা ঘেউ ঘেউ করে চলেছেন। ব্যক্তির এরকম আচরণ দেখে হকচকিয়ে যান জয়েন্ট বিডিও থেকে শুরু করে সকলে। তবে পরে বোঝা যায় প্রকৃত ঘটনা। আসলে ওই ব্যক্তির নাম শ্রীকান্তি কুমার দত্ত। রেশন কার্ডে তাঁর নাম আর পদবির বানান ভুল থাকায় তা সংশোধনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু রেশন কার্ড সংশোধন হলেও তাঁর পদবিতে দত্তর পরিবর্তে লেখা রয়েছে ‘কুত্তা’। তাই প্রতিবাদ জানাতে এরকম আচরণ করেন ওই ব্যক্তি। অবশেষে প্রতিবাদে কাজ হল। সংশোধন হল ওই ব্যক্তির রেশন কার্ড। বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের ব্যতিক্রমী এই ঘটনা অবাক করেছে প্রায় সকলকেই।
বাঁকুড়ার কেশিয়াকোল গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্তি দত্ত। নতুন রেশন কার্ড হাতে পেলে তিনি দেখেন তাতে লেখা রয়েছে শ্রীকান্তি মণ্ডল। ভুল পদবী সংশোধনের জন্য তিনি আবেদন করেন। কিন্তু তারপরেও তার নাম আসে শ্রীকান্ত দত্ত। এরপর আবারও দুয়ারে সরকারে গিয়ে তিনি নাম সংশোধনের জন্য আবেদন জানান। গত ১১ নভেম্বর রেশন কার্ড ডাউনলোড করে দেখতে পান তার নাম ঠিক রয়েছে। তবে পদবি দত্তর পরিবর্তে লেখা রয়েছে ‘কুত্তা’।
[আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ইস্যুর নিয়মে বড়সড় রদবদল, কী নির্দেশিকা মুখ্যসচিবের?]
এরপরেই চূড়ান্ত বিরক্ত হন শ্রীকান্তি। পদবি সংশোধনের জন্য গত ১৬ নভেম্বর আবার তিনি ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান গাড়িতে বসে রয়েছেন জয়েন্ট বিডিও। আর তখনই অভিনব প্রতিবাদ করার কথা মাথায় আসে শ্রীকান্তির। জয়েন্ট বিডিওর গাড়ি আটকে জানলার কাঁচ বেয়ে একজন একটানা ঘেউ ঘেউ করে চলেন তিনি।
তাঁর প্রতিবাদের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপর জয়েন্ট বিডিও বিমান কর, শ্রীকান্তিকে সঙ্গে নিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যান। সেখান তিনি আধিকারিক এবং অন্যান্য কর্মীদের অবিলম্বে ভুল সংশোধনের নির্দেশ দেন। সূত্রের খবর, তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভুল সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত রেশন কার্ড ডাউনলোডও করেছেন শ্রীকান্তি। তবে নাম ও পদবির ভুল সংশোধনের জন্য তাঁকে যেভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তার কড়া সমালোচনা করেছেন শ্রীকান্তি। তাঁর কথায়, “কোনও মানুষের পক্ষে সমস্ত কাজ ফেলে বারবার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যাওয়া সম্ভব নয়।”