shono
Advertisement

১৩০ বছরে প্রথম, করোনার জেরে বারদিতে ছেদ পড়ল লোকনাথ বাবার তিরোধান উৎসবে

হাসিনা সরকারের নির্দেশে বন্ধ করা হয়েছে বারদি যাওয়ার সমস্ত রাস্তা। The post ১৩০ বছরে প্রথম, করোনার জেরে বারদিতে ছেদ পড়ল লোকনাথ বাবার তিরোধান উৎসবে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:04 PM Jun 02, 2020Updated: 09:04 PM Jun 02, 2020

কৃষ্ণকুমার দাস: ১৩০ বছরে এই প্রথমবার। তিরোধান দিবসে ভক্তরা পৌঁছতে পারলেন না লোকনাথবাবার বারদির সমাধি মন্দিরে। শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে স্থগিত বারদি মন্দিরের দু’দিনব্যাপি ১৩০তম লোকনাথ তিরোধান উৎসব-যজ্ঞ।

Advertisement

আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু তথা মহাসাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবনের শেষ ২৬ বছরের লীলাক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের এই পবিত্র বারদি আশ্রম। হাসিনা সরকারের নির্দেশে অনুসারে বারদি যাওয়ার সমস্ত রাস্তা মঙ্গলবার সকাল থেকেই সিল করে দেওয়া হয়েছে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে। পুন্যার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও অবশ্য আশ্রমের মূল ফটক বন্ধ করে ভিতরে পুজা-অর্চনা নিয়ম মতোই সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ১১.৪০ মিনিটে অঞ্জলি এবং দেবারতি সবই নিয়ম পালন করে সম্পন্ন করেছেন প্রধান পুরোহিত প্রাণেশ চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য, বারদির (Baradi) পাশাপাশি লোকনাথবাবার স্মৃতিধন্য উত্তর ২৪ পরগনার কচুয়া ও চাকলাধামেও গেট বন্ধ রেখেই দুই মন্দিরে পুজো-অর্চনা এবং অঞ্জলিপর্ব সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশি বাধা ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আশপাশ থেকে বহু ভক্তের সমাগম হলেও সবাই আশ্রমের গেটের বাইরেই প্রদীপ  ও ধূপকাঠি জ্বেলে প্রণাম করেছেন।

[আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে ‘মস্তান’ বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বক্তব্য প্রত্যাহার চাইল রাজভবন]

বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯ জৈষ্ঠ্য, রবিবার লোকনাথবাবার মহাপ্রয়াণের খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত ছুটে এসেছিলেন বারদির মহাযোগীর কুটিরের সামনে। সেদিন সকাল সাড়ে দশটার কিছু পরে নিজের আসন-মন্দির ছেড়ে বাইরে এসে শেষবার সবাইকে দর্শন দিয়েছিলেন তিনি। নির্দেশ দিয়েছিলেন, অবিলম্বে আহার করার জন্য। খাওয়া শেষ হতেই ভক্তদের ব্যাকুলতা দেখে বাবা লোকনাথ বলেছিলেন, “আমি কি মরে যাব? পুরনো এই দেহটা শুধু গত হবে, যেমন ছিলাম, তেমনই তোদের মধ্যে আছি, থাকবও।” ভক্তদের এই বলে আশ্বস্ত করে তিনি নিজের শয়ন কুটিরে যান এবং ধ্যানে বসেই ১১.৪০ মিনিটে দেহত্যাগ করেন।

বারদির লোকনাথ আশ্রমের মূল গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলে ডানদিকেই চোখে পড়বে মহাযোগীর সেই কুটির ঘিরে তৈরি হওয়া সমাধিমন্দির। প্রতিবছর শুক্লাত্রয়োদশীর এই তিথিতে ভারত, নেপাল, ভূটান ছাড়াও পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড থেকে ভক্তরা বারদিতে এসে সমাধিমন্দিরে অঞ্জলি দেন। কিন্তু এবার বারদি তথা সোনারগাঁও জুড়ে করোনার দাপট বৃদ্ধি পেতেই জেলাশাসক মহম্মদ জসিমউদ্দিন লোকনাথবাবার আশ্রমের সম্পাদক শংকর কুমার দে’র সঙ্গে আলোচনা করে তিরোধান উৎসব ও মেলা বন্ধ করে দেন।

এপ্রসঙ্গে বারদি আশ্রমের সম্পাদক শংকরবাবু ফোনে জানান, “প্রতিবছর জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভক্ত আসেন। এবছর ৫ লক্ষের বেশি পুন্যার্থী আসবেন বলে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার ভয়াবহতা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে গোটা দেশজুড়ে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।” হিমালয় থেকে ফিরে এসে বাবা যে আসনে বসে শেষ ২৬ বছর লীলাপর্ব চালিয়েছেন, সেই মূলমন্দির থেকে এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে অঞ্জলি সম্প্রচার করা হয়েছে। এদিকে, পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করছেন, আর সেই লাইভ দেখে বাড়ি বসে অনেক ভক্তই অঞ্জলি দিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: ‘বাংলার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলি মৃত্যুর আঁতুরঘর’, নতুন পদ পেয়েই রাজ্যকে বিঁধলেন সায়ন্তন]

প্রসঙ্গত, তিরোধান উৎসব বন্ধের মাঝেই এদিন সন্ধ্যায় আশ্রমে খবর এসেছে বারদি লাগোয়া দুই গ্রামে করোনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আশ্রমের সমস্ত উৎসবে অংশ নেওয়া বারদি ইংলিশ হাইস্কুলের কর্ণধার আনোয়ার হোসেন আনুর স্বীকারোক্তি,  “তিরোধানে বাবার দর্শন না হওয়ার মনখারাপ। তবে করোনা থেকে তো আগে বাঁচতে হবে।”

The post ১৩০ বছরে প্রথম, করোনার জেরে বারদিতে ছেদ পড়ল লোকনাথ বাবার তিরোধান উৎসবে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement