shono
Advertisement

সরকারি হাসপাতালে ‘হাই টেক’চুরি! টানেল দিয়ে পাচার হচ্ছে রোগীর বালিশ-কম্বল-স্যালাইন

চুরির রহস্যভেদ।
Posted: 06:39 PM Apr 23, 2022Updated: 09:59 PM Apr 23, 2022

ধীমান রায়, কাটোয়া: সরকারি হাসপাতালে রোগীদের জন্য কম্বল, বিছানার চাদর-সহ বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ করে সরকার। তবুও পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রায়শই এই সমস্ত সামগ্রীর ঘাটতি থাকছে। ফলে রোগীদের অনেককেই বাড়ি থেকে চাদর-কম্বল নিয়ে আসতে হত। এমনকী, হিসাবে মিলত না স্যালাইনের বোতলেরও। এত জিনিস যাচ্ছে কোথায়, হাসপাতালের অনেক কর্মীর মনেই আসছিল এই প্রশ্নটা। অবশেষে রোগীদের বিছানায় ব্যবহার করা বেডকভার, কম্বল উধাও হয়ে যাওয়ার ‘রহস্য’ভেদ হল শনিবার সকালে। আসল সত্যি সামনে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ হাসপাতাল কর্মীদের।

Advertisement

কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে (Katwa Hospital) এযাবৎ রীতিমতো ‘হাইটেক চুরি’র ঘটনা ঘটছিল। ঘুণাক্ষরেও তা টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু কথায় আছে, ধর্মের কল নড়ে বাতাসে। এদিন বমাল ধরা পড়ে চোর। চুরির চক্র ফাঁস হতে দেখা যায় সরষের মধ্যেই লুকিয়ে ভূত। চুরির ঘটনায় আপাতত আটক করা হয়েছে কাটোয়া হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মী, এক আয়া-সহ মোট তিনজনকে। হাসপাতাল সুপার এনিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকালে হাসপাতালে রোগীদের বিছানার সামগ্রী সাফাইয়ের জন্য পাঠানো হয়ে থাকে। কাচার জন্য নির্দিষ্ট সংস্থাকে বরাত দেওয়া আছে। আর সংস্থার কর্মী সেসব অপরিষ্কার সামগ্রী সংগ্রহ করে নিয়ে যান হাসপাতাল থেকে।

[আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই অনুব্রতকে সিবিআই তলব, বিকেলে নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ]

উল্লেখ্য, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল ভবনটি তিনতলা। তিনতলায় রয়েছে মহিলা রোগীদের ওয়ার্ড, দোতলায় প্রসূতি মহিলাদের ওয়ার্ড এবং একতলায় রয়েছে পুরুষদের ওয়ার্ড। এই তিনটি তলায় রোগীদের ওয়ার্ডগুলিতে ব্যবহৃত সামগ্রী কাচার জন্য বাইরে পাঠাতে বছর তিনেক আগে হাসপাতাল ভবনে বসানো হয়েছে একটি টানেল। টিনের পাতে তৈরি এই টানেল দিয়েই বিছানার চাদর,কম্বল বা অস্ত্রোপচারের পোশাক ইত্যাদি পাঠানো হয়।

কাটোয়া হাসপাতাল। ছবি: জয়ন্ত দাস।

এদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই টানেলের মুখের কাছে ‘অপরিষ্কার সামগ্রী’ নিয়ে বস্তায় ভরছিলেন এক ব্যক্তি। তার দিকে হঠাৎ নজর যায় কাটোয়া হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির কর্মী চণ্ডিচরণ মুখোপাধ্যায়ের। তিনি খেয়াল করেন ওই অপরিষ্কার সামগ্রীর সঙ্গে পড়ছে স্যালাইনের বোতলও। চণ্ডিচরণবাবু কাছে গিয়ে দেখতে পান কাওসর শেখ নামে এক ব্যক্তি চাদর,কম্বলের সঙ্গে স্যালাইনের বোতলগুলিও ভরে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, অপরিষ্কার সামগ্রীগুলির সঙ্গে রয়েছে বেশকিছু নতুন চাদর-কম্বলও। চণ্ডিচরণবাবু সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ক্যাম্পে জানান।

কাটোয়া হাসপাতাল। ছবি: জয়ন্ত দাস।

পুলিশ এসে কাওসর শেখকে আটক করে। তাকে জিঞ্জাসাবাদ করে জানা যায় টানেলের ওপর প্রান্ত থেকে যারা লুকিয়ে ওইসব জিনিসপত্র পাচার করছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছেন অস্থায়ী কর্মী শ্রীলক্ষী হাজরা, একজন আয়া রিনা সরকার। তাদেরও আটক করা হয়েছে। কাওসরের বাড়ি নদিয়া জেলার বল্লভপাড়া এলাকায়। কাটোয়া হাসপাতাল সুপার সৌভিক আলম বলেন, “হাসপাতালে রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরকারিভাবে যথাযথভাবে সরবরাহ করা হয়। অথচ হাসপাতাল কর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারি জিনিসপত্রে প্রায়ই টান পড়ছে। চুরির ঘটনার কথা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক।”

[আরও পড়ুন: সেতুতে বিরাট ফাটল, আগামী কয়েক দিন বন্ধ দক্ষিণ কলকাতার এই গুরুত্বপূর্ণ উড়ালপুল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার