অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ৮জনের গরু পাচারকারী দলকে ধরল কালনা থানার পুলিশ। গরুচুরি করার আগে পুলিশের পাতা জালে ধরা পড়ল দুষ্কৃতীরা। তারা প্রত্যেকেই হরিয়ানার বাসিন্দা। ধৃতদের বৈদ্যপুর গ্যারেজ মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের বয়স ২০ থেকে ৫৩ বছরের মধ্যে। শুক্রবার কালনা আদালতে টিআই প্যারেডের জন্য আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। প্রত্যেকের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ অক্টোবর রাতে কয়েকজনের দল পিকআপ ভ্যানে গরুচুরি করে পালাচ্ছিল। বিষয়টি কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারের নজরে আসে। তিনি খবর দেন থানায়। পুলিশ গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করে। গাড়িটি না দাঁড়িয়ে উলটে পুলিশকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ধাওয়া করার জেরে শেষে গাড়ি ফেলে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। গরুটিকে উদ্ধার করে মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
তার পর থেকেই তদন্ত চলতে থাকে। বিভিন্ন সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে, দলটি ফের গরুচুরির 'অপারেশনে' বেরবে। সেই মতো আগে থেকে ফাঁদ পেতে রাখে পুলিশ। ধরা পড়ে দুষ্কৃতীরা। কালনা এসডিপিও রাকেশকুমার চৌধুরী জানান, "গরুচুরির ঘটনায় যুক্ত বড়সড় একটি গ্যাং ধরা পড়েছে। ৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।"
উল্লেখ্য, এর আগে বেশ কয়েক মাস ধরে নাদনঘাট থানা এলাকায় গরুচুরির ঘটনা ঘটছিল। গত সেপ্টেম্বরে পুলিশের পাতা জালে ধরা পড়ে তিনজনের একটি দল। নাদনঘাট থানার পুলিশ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও হুগলি জেলার তিনজন গরুচোরকে জেলেও পাঠায়। এর পর বেশ কিছুদিন যাবৎ গরুচোরদের উৎপাত বন্ধ থাকলেও অক্টোবর মাস থেকে সেই উৎপাত আবার বাড়ে। তবে এবার আর নাদনঘাট থানা এলাকায় নয়। দুষ্কৃতীরা স্থান পরিবর্তন করে পাশের কালনা থানায় 'অপারেশন' চালায়। সেখানেই চুরি করার সময় পুলিশের তাড়া খায়। অবশেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দলটির মধ্যে কেউ কেউ আগে থেকেই নদিয়ার কোতোয়ালি থানা-সহ কয়েকটি এলাকায় গরুচুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এরা গরুচুরি করে কোথায় কোথায় তা বিক্রি করে? কীভাবে পরিকল্পনা করে? এদের মাস্টারমাইন্ড কে, জানতে পুলিশ ধৃতদের জেরা করছে।