রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একুশের ভোটে গেরুয়া শিবিরের বিশেষ নজরে মতুয়া ভোট। তাই মতুয়া ও উদ্বাস্তু অধ্যুষিত বনগাঁ (Bongaon) কেন্দ্রকে পৃথক সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ঘোষণা করল বঙ্গ বিজেপি (BJP)। এ নিয়ে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বিধানসভার আগে ভোটব্যাংকের কথা মাথায় রেখে সেই দাবি এবার পূরণ করলেন দিলীপ ঘোষরা। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি হলেন শান্তনু ঠাকুর ঘনিষ্ঠ মানসপতি দেব। লক্ষ্য একটাই, এই অঞ্চলে পদ্মশিবিরের সাংগঠিক ভিত আরও মজবুত করে তোলা।
আগে বারাসত সাংগঠনিক জেলার মধ্যেই ছিল বনগাঁ। এছাড়া বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত ৭ বিধানসভাও আলাদা আলাদা জেলা কমিটির মধ্যে ছিল। তাতে সংসদীয় এলাকার কাজে নজর রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের (Santanu Thakur) পক্ষে। এই যুক্তি দেখিয়ে তিনি একাধিকবার বনগাঁকে পৃথক সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত একুশের ভোটের আগে তাঁর সেই আরজিতে সিলমোহর পড়ল।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির সঙ্গে আমার নীতি-আদর্শ মেলে না’, গেরুয়া শিবিরে যোগের জল্পনা ওড়ালেন অরূপ রায়]
নতুন সাংগঠনিক জেলা বনগাঁয় সভাপতি নিয়োগ করে পুরোদমে কাজে নেমে পড়তে চাইছে বঙ্গের গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, জানুয়ারির ১৯ কিংবা ২০ তারিখ রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) বনগাঁয় সভা করবেন। মতুয়াদের আশ্বস্ত করতে CAA লাগু করা নিয়ে কোনও বার্তা দিতে পারেন তিনি। তার আগে নতুন পরিচয়ে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁর আত্মপ্রকাশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বনগাঁ এবং সংলগ্ন এলাকায় মতুয়া এবং উদ্বাস্তুদের বসবাস বেশি। মতুয়া মহলে বিজেপির জনপ্রিয়তাও অধিক। গত লোকসভা ভোটে বনগাঁ থেকে বিজেপির হয়ে এক মতুয়া প্রতিনিধির সাংসদ হওয়াই তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। বিধানসভাতেও সেই ভোটব্যাংক অক্ষুণ্ণ রাখতে একুশের আগে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বনগাঁয়। এছাড়া কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) পাশ হওয়ায় খুশি মতুয়ারা। কারণ, আইন কার্যকর হলে তাঁরাই সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন, পাবেন স্থায়ী নাগরিকের সম্মান।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার অলংকার অর্মত্য সেনকে অপমান করে সোনার বাংলা গড়বে!’, বিজেপিকে খোঁচা অধীরের]
আইন কার্যকর করতে বারবার কেন্দ্রের কাছে আরজি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সম্প্রতি এই ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামান্য মনোমালিন্য হয়। তবে তা যে মিটেও গিয়েছে, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা ঘোষণা করে শান্তনুর এই আবেদনে সিলমোহর দেওয়াই তার প্রমাণ।