রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় দলের বিপুল সাফল্য। কলকাতায় হবে বিজয়োৎসব। আর সেখানে মধ্যমণি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। শাহ নিজেই বাংলায় দলের বিজয়োৎসবে আসতে চান। কেন্দ্রে মন্ত্রিসভা গঠন হয়ে গেলে, সম্ভবত জুনের প্রথম সপ্তাহেই কলকাতায় বিজয়োৎসবের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। সেখানে অমিত শাহর পাশাপাশি একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীরাও উপস্থিত থাকবেন। এরই মধ্যে আজ দিল্লিতে যাচ্ছেন রাজ্য থেকে নবনির্বাচিত বিজেপির ১৮ জন সাংসদ। আজ দুপুরেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসেই তাদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলবেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ। বাংলায় দলের সেনাপাতিদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করার সম্ভাবনা রয়েছে মোদি-শাহর। সেই বৈঠকেই ঠিক হতে পারে বিজয়োৎসবের দিনক্ষণ।
উৎসবের রেশ যেন চলছেই ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনে। বাড়ছে ভিড়। শুক্রবারও আবিরে রেঙেছিল রাস্তা। চলছিল মিষ্টিমুখ। বাংলায় বিপুল সাফল্যের পর এদিনও কর্মীদের উচ্ছ্বাসে ঘাটতি ছিল না। আর তার মাঝেই দলের কর্মী-সমর্থকরা উষ্ণ অভ্যর্থনা করে সাদরে বরণ করে নিলেন মেদিনীপুর থেকে জয়ী দলের নবনির্বাচিত সংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। শুধু দিলীপই নন, দেবশ্রী চৌধুরি থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিং-সহ রাজ্য দফতরে আসা মোট চারজন নবনির্বাচিত সাংসদকে এদিন সংবর্ধনা দেওয়া হল দলের তরফে। আর সংবর্ধনার মঞ্চ থেকেই শাসকদলকে উদ্দেশ করে দিলীপ ঘোষ এদিন স্লোগান তুললেন, ‘উনিশে হাফ একুশে সাফ।’
রাজ্য দপ্তরের সামনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তির পাশেই করা হয়েছে মঞ্চ। দুপুর থেকেই অপেক্ষা ছিল দলের জয়ী প্রার্থী তথা নবনির্বাচিত সাংসদরা কখন আসবেন। বিশেষ করে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জন্য অপেক্ষার ভিড় ক্রমশ বাড়ছিল। প্রথম এলেন রায়গঞ্জ থেকে নির্বাচিত দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরি। স্লোগান উঠল দেবশ্রীদিদি স্বাগতম। তাঁকে রাজ্য দপ্তরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন কর্মীরা। দেবশ্রীর কথায়, রায়গঞ্জের রাস্তাঘাট-হাসপাতাল এসবেরই উন্নয়ন দরকার। তবে শুধু রায়গঞ্জেরই নয়, উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়ন প্রয়োজন। কিছুক্ষণ পরেই এলেন দিলীপ ঘোষ। অপেক্ষারত কর্মীরা একেবারে রাস্তা থেকে ফুল ছুঁড়তে ছুঁড়তে স্বাগত জানিয়ে মঞ্চে নিয়ে এলেন তাঁকে। দিলীপ, দেবশ্রী যখন মঞ্চে ততক্ষণে হাজির বারাকপুরের নবনির্বাচিত সাংসদ অর্জুন সিংও। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মালা দেওয়ার পর চলল সংবর্ধনা দেওয়ার পালা। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, সারা পশ্চিমবঙ্গে গেরুয়া ঝড়ে চাপা পড়ে গিয়েছে ঘাসফুল। যাঁরা দলের জন্য জীবন দিয়েছেন এই বিরাট জয় তাঁদের জন্য অর্পণ করেন তিনি। বাংলায় দলের এই সাফল্যের দিনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ছে বলে মন্তব্য দিলীপের। দলের জয়ের কৃতিত্ব বঙ্গ বিজেপিতে কাকে দেওয়া হবে? প্রশ্নের উত্তরে দিলীপের সতর্ক জবাব, আমরা জিত চেয়েছি, পেয়েছি। কৃতিত্ব যাকেই দেওয়া হোক সেটা বড় কথা নয়। জয়টাই আসল কথা।
সবশেষে মহিলা মোর্চা সংবর্ধনা দেয় হুগলির নবনির্বাচিত সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। আপ্লুত লকেটও। তাঁর কথায়, এটা মানুষের জয়। গণতন্ত্রের জয়। দলের কর্মীদের পরিশ্রমের ফসল এই জয়। সিঙ্গুরে টাটারা ফিরে আসকু। শিল্প হোক। বেকাররা আবার চাকরি পাক। এদিন ফের একথা বলেন হুগলির নবনির্বাচিত সাংসদ। তাঁর কথায়, মানুষ শিল্প ও কৃষি দুটোই চায়। হুগলিতে বন্ধ জুটমিল খোলার জন্যও চেষ্টা করবেন বলে এদিন আশ্বাস লকেটের।
The post জুনেই বিজয়োৎসব বিজেপির, কলকাতায় সাফল্যসভায় মধ্যমণি হবেন শাহ appeared first on Sangbad Pratidin.