নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বারবার কৃষক আন্দোলনকে (Farmers Protest) সমর্থন জানিয়েছেন। এও বলেছিলেন, তাঁরা ডাকলে তিনিও দিল্লি যেতে প্রস্তুত। তবু এই বার্তা সরাসরি আন্দোলনরত কৃষকদের তিনি নিজে না বলা পর্যন্ত যেন কোথাও একটা আক্ষেপ থেকে যাচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। এবার আর সেই আক্ষেপের জায়গা রইল না। দিল্লিতে অবস্থানরত কৃষকদের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধি হয়ে দেখা করতে গেলেন ডেরেক ও ‘ব্রায়েন। আর তাঁর ফোনে ফোন করে কৃষকদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে। নাতিদীর্ঘ বক্তব্যে বারবার বুঝিয়ে দিলেন, এই আন্দোলনকে তিনি সমর্থন করেন, সম্মান করেন। সবরকমভাবে তৃণমূল তাঁদের পাশে রয়েছে। তাঁদের লড়াইয়ের জন্য কুর্নিশও জানালেন।
কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বেশ দিল্লির দরবারে পৌঁছে গিয়েছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা। আপাতত দিল্লি সীমানায় তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে শামিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বার দুয়েকের বৈঠক নিষ্ফলা। আইন প্রত্যাহার করা না হলে এভাবেই তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে সিদ্ধান্তে অনড়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোড়া থেকেই এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। কারণ, বাংলার ইতিহাসে যে কৃষক বিদ্রোহে সিঙ্গুর আন্দোলন রয়েছে, যার হাত ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ার এগিয়েছে। তৎকালীন বাম শাসন ধুলিসাৎ হয়েছে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে কৃষক আন্দোলনের কাছে। সে কথা স্মরণ করেই তিনি বারবার কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন।
[আরও পড়ুন: কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হাতে আসবে করোনার ভ্যাকসিন, সর্বদল বৈঠকে ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর]
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দলের প্রতিনিধি হিসেবে ডেরেক ও ‘ব্রায়েন (Derek O ‘Brien)যান দিল্লিতে। দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় অবস্থানরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় চার ঘণ্টা তিনি সেখানে থেকে বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এরই মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ডেরেকের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বলে খবর। তিনি কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইছিলেন। কিন্তু কোনওভাবে ঠিকমতো যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অবশেষে অবশ্য তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়। ডেরেক ফোনে কৃষকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলিয়ে দেন।
[আরও পড়ুন: মাঝরাতে গুলির লড়াই মধ্যপ্রদেশে, খতম হাফ ডজন খুনে অভিযুক্ত ‘সাইকো কিলার’]
মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন। কৃষি আইন প্রত্য়াহারে কেন্দ্রকে চাপ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় তৃণমূলও কৃষকদের সঙ্গে রয়েছে, সেকথাও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পালটা তাঁকে ‘বোন’ সম্বোধন করে কৃষকরা নমস্কার জানিয়েছেন। ফোনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনকারীরাও খানিক অক্সিজেন পেলেন বলে মন রাজনৈতিক মহলের একাংশের।