দীপঙ্কর মণ্ডল: আলু, পিঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর লাগামছাড়া দামবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রকে চিঠি লিখে সংসদে সদ্য পাশ হওয়া অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধনীটি কার্যকর না করার আবেদন জানাবেন। বৃহস্পতিবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এমনই জানালেন তিনি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সংসদে পাশ হয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধনী বিল (Essential commodities Amendment law)। তাতে পালটে গিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ধারণা। এখন থেকে চাল, আলু, পিঁয়াজ, ভোজ্য তেল, ডালের মতো বেশ কয়েকটি দৈনন্দিন খাদ্যসামগ্রী আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে গণ্য হবে না। এর ফলে এই পণ্যগুলি এবার থেকে ইচ্ছেমতো মজুত রাখতে পারবে ব্যবসায়ীরা। মজুত রাখার পাশাপাশি ইচ্ছেমতো দামে এগুলি বিক্রি করা যাবে, এক এলাকা থেকে কিনে অন্য এলাকায় নিয়ে বিক্রিতে কোনও বাধা থাকবে না। এককথায়, এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির কেনাবেচা এবং মজুতদারির উপর এতদিন যে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছিল, তা পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে। আর এখানেই আপত্তি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠে যাওয়ার ফলে কালোবাজারির বাড়বাড়ন্ত হবে। তাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তরা।
[আরও পড়ুন: কালীপুজোয় রাজ্যে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি এবং পোড়ানো, নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের]
এদিন নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। অ্যাগ্রো মার্কেটিং নিয়ে আগে একটা সিস্টেমে কাজ করতাম। এখন আমাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সংসদে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ে যে আইন পাশ হয়েছে, তা নিয়ে আমি কেন্দ্রকে একটা চিঠি লিখব। তাতে আবেদন জানাব যে এটা কার্যকরী হলে মানুষের কী সমস্যা হবে।” এরপর আলু, পিঁয়াজের লাগামছাড়া দাম নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫ টাকা কেজি দরে আলু দিতে পারব। তারপর আর উপায় নেই। জোতদার-মজুতদাররা কালোবাজারি করছে। একদিকে, কোভিড সংকট, আরেকদিকে কালোবাজারির সমস্যা।”
[আরও পড়ুন: ‘মহামারী আইন ভাঙছে একটি রাজনৈতিক দল’, নাম না করে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর]
রাজ্যে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে পুজোর আগে ধরেই নবান্নে দফায় দফায় বৈঠক করেছে রাজ্যের কৃষি দপ্তর। সেখানে একাধিকবার আলুর দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভিনরাজ্যে আলু রপ্তানিতেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তারপরও উৎসবের মরশুমে এত দামবৃদ্ধিতে স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নীতিকেই দায়ী করছেন।