সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের জয়। তাঁদের নিয়োগের পথে হাঁটল রাজ্য। একদিকে ৫ হাজারের বেশি শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, ‘ব্যতিক্রমী’ নিয়োগ বাতিল করে বঞ্চিত প্রার্থীদের নিয়োগের পরিকল্পনা করছে শিক্ষাদপ্তর। এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে হলফনামা জমা করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
রাজ্যের এই প্রস্তাবের প্রশংসা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে লেখেন, “প্রতিশ্রুতি মতো রাজ্যর মানুষের কল্যাণকে গুরুত্ব দেওয়ায় তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এসএসসি ১৪ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ শুরু করছে। আদালত রায় দিলেই প্রক্রিয়া শুরু হবে। সকল যোগ্য প্রার্থী তাঁদের প্রাপ্য পাবে।”
৫৬০-এর বেশি দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) একাধিক মামলা হয়েছে। পুজোর আগে প্রায় দেড় হাজার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চলছে সিবিআই-ইডি তদন্ত। তারপরেও আন্দোলনের পথ থেকে সরছেন না যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি-দাওয়া পূরণে মানবিক ভূমিকা পালন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এদিন সেই বার্তাই দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। একইসঙ্গে আন্দোলনকারীদের কাছে তাঁর আরজি, “পুজোয় বাড়িতে ফিরে যান। আত্মীয়দের কাছে ফিরে যান। আন্দোলন তুলে নিন। রাজ্য আপনাদের নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে চায়। মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার উপর ভরসা রাখুন।”
[আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে উত্তরপত্র নষ্টের অভিযোগ, ফের নিয়োগ বিতর্কে CBI তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
এদিন শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে ৫ হাজার ২৬১টি শূন্যপদ তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে নিয়োগ করা হতে পারে। আবার ‘ব্যতিক্রমী’ভাবে নিযুক্ত হওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ বাতিল করে মেধাতালিকা অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হতে পারে। ২০১৪-১৬ এর এসএসসির ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
তবে ব্রাত্য বসু আরও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কারওর চাকরি বাতিলের পক্ষে নয়। কারণ কারওর চাকরি গেলে তার প্রভাব পড়ে পরিবারের সদস্যদেরও উপরেও। তাই ‘ব্যতিক্রমী’ভাবে নিযুক্ত প্রার্থীদের বহাল রেখেই অতিরিক্ত শূন্যপদে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হতে পারে। হলফনামায় দুই প্রস্তাবই কলকাতা হাই কোর্টকে জানাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এরপর আদালত যা নির্দেশ দেবে সেই মেনে নিয়োগের পথে হাঁটবে রাজ্য সরকার। তবে এদিন শিক্ষামন্ত্রী নিয়োগে দুর্নীতির কথা কার্যত মেনে নিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।