সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্ভবত নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। নির্বাচনের আগে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ এবং তার উপর আলোচনা হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই। কিন্তু সাংবিধানিক নিয়ম মেনে এবার আর রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হচ্ছে না বলে খবর। আর সেটাই রাজ্য বিধানসভায় (WB Assembly) বেনজির ঘটনা হতে চলেছে। শুক্রবার সকালেই এ নিয়ে টুইটে প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) । সংবিধানের বিশেষ ধারা উল্লেখ করে মনে করিয়ে দিলেন সংশ্লিষ্ট নিয়ম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে কর্তব্য সম্পর্কেও সতর্ক করে দিলেন তিনি।
সাংবিধানিক নিয়মানুযায়ী, আইনসভার যে কোনও অধিবেশনের সূচনা হয় সাংবিধানিক প্রধানের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে। সংসদের ক্ষেত্রে তা রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে শুরু হয় এবং রাজ্যগুলির বিধানসভার ক্ষেত্রে অধিবেশনের সূচনা করেন রাজ্যপাল। পশ্চিমবঙ্গও ব্যতিক্রম নয়। সাধারণত প্রতিটি অধিবেশনের শুরুতেই সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে সূচনা ভাষণ রাখেন রাজ্যপাল। কিন্তু আসন্ন অধিবেশনেই তার ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে। আগামী ৫ ফ্রেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় পেশ হবে ভোট অন অ্যাকাউন্ট (Vote on Account) । আর কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তাই রীতি মেনে তার আগে পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়, ভোট অন অ্যাকাউন্টই পেশ করা হয়। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর পেশ করা ভোট অন অ্যাকাউন্ট নিয়ে আলোচনা হবে আগামী ৬ ও ৮ তারিখ। কিন্তু সূত্রের খবর, গোটাটাই হবে রাজ্যপালের কোনও ভাষণ ছাড়া। আর তাতেই ফের রাজ্য ও রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব উসকে উঠছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
[আরও পড়ুন: শ্বাসনালিতে টিউমার, ২ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল সদ্যোজাতর]
শুক্রবার সকালে এ নিয়ে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। লেখেন, সংবিধানের ১৭৬’এর এ ধারা অনুযায়ী, বছরের প্রথম বিধানসভা অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে, এর অন্যথা হয় না। অথচ পশ্চিমবঙ্গে এবার তা হচ্ছে না। পাশাপাশি তিনি এও লেখেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কোনওভাবেই সংবিধানের নিয়ম এড়িয়ে যেতে পারে না।
[আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই চালু হতে পারে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো, জানালেন আধিকারিকরা]
কিন্তু কেন রাজ্যপালের ভাষণ বাদ দিয়ে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের সম্ভাবনা এবার? ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, সাধারণত অধিবেশনের সূচনা ভাষণে রাজ্য সরকারের খসড়া করে দেওয়া বক্তৃতাই পড়তে হয় সাংবিধানিক প্রধানদের। সেখানে সরকারি কাজের পরিসংখ্যান থাকে। কিন্তু রাজ্যপাল ধনকড় রাজ্য সরকারের পারফরম্যান্স নিয়ে নানা সময়েই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়ে থাকেন। সাফল্যের বদলে সরকারি ব্যর্থতার কথা প্রায়শয়ই শোনা যায় তাঁর বক্তব্য়ে। তাই তিনি রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণ পড়তে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন। গতবারের অধিবেশনে সূচনা ভাষণ দেওয়ার পর ধনকড় জানিয়েছিলেন যে রাজ্যের লিখে দেওয়া বক্তৃতাই তিনি পড়েছেন, তবে তার সবটার সঙ্গে একমত নন। হয়ত তাই এ বছর তাঁর সূচনা ভাষণই বাদ দিতে চলেছে সরকার। কারণ যাইই হোক, এহেন ঘটনা রাজ্যের ইতিহাসে একেবারেই বেনজির বলে উল্লেখ করছে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল।