ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিধানসভার ভোটের আগে খড়গপুরবাসীর মন পেতে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভার। খড়গপুরের সিংহভাগ বাসিন্দা তেলুগু। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ‘তেলেগু’কে (Telugu) রাজ্যের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হল। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি, এই তেলুগুভাষীরা ভাষাগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদা পেলেন। রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত একেবারেই ভোটমুখী বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
খড়গপুর শিল্পাঞ্চলে অধিকাংশই তেলেগুভাষীদের বসবাস। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, তেলেগুকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের। সেখানকার বিধায়ক প্রদীপ সরকারও এ নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন মেনেই রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এদিনের বৈঠক শেষে তিনি জানান যে, ওখানকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে তেলুগুকে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এছাড়া এই ভাষার নিরিখে তেলেগুভাষীরা এ রাজ্যে ভাষাগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বীকৃতিও পেলেন। রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তে এতদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় স্বভাবতই খুশি খড়গপুরের তেলেগুভাষীরা।
[আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে মন্তব্য কেন? সায়ন্তনকে শোকজ দিলীপের]
এদিনের বৈঠক শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও জানান যে এর আগে রাজ্যে হিন্দি, উর্দু, নেপালি, গুরুমুখী, ওড়িয়া ভাষা ছিল সরকারি ভাষা। পরবর্তীতে তাতে সংযোজন করা হয় রাজবংশী, কামতাপুরি, সাঁওতালি ভাষা। আর এবার নয়া সংযোজন তেলুগু। বাংলার ভোটের আগে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ভাষাও এবার একটা ফ্যাক্টর। বাঙালিদের মন পেতে দিল্লির নেতারা বাংলা শিখছেন। জনসভায় দু, একটা বাংলা কথাও শোনা যাচ্ছে তাঁদের ভাষণে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদিই বাংলায় দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সদ্য রাজ্যে ঘুরে যাওয়া অমিত শাহও একাধিকবার বাংলায় টুইট করেছেন। ফলে ভোটে ভাষার গুরুত্ব যে থাকছেই, তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে তেলেগুকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দিয়ে রাজ্যের শাসকদল একটা চমক দিল বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এখন তৃণমূল এর সুফল কতটা পায়, তা বোঝা যাবে খড়গপুরের নির্বাচনী ফলাফলে।