মলয় কুণ্ডু: যে সমস্ত ব্যাংক জনস্বার্থমূলক প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে না, এবার তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে ওই সমস্ত ব্যাংকে সরকারি কাজ ও প্রকল্প বাবদ জমা থাকা সমস্ত অর্থ তুলে নেওয়া হবে। তাঁদের সঙ্গে কোনও আর্থিক লেনদেন করা হবে না। কোন কোন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংক সরকারি প্রকল্পের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া ঋণ দিচ্ছে না, সেই সমস্ত ব্যাংককে চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের তালিকা তৈরি করে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অর্থ দপ্তরকে। শনিবার নবান্ন থেকে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করবেন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী (H. K. Dwivedi)। সেখানে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: পরিত্যক্ত গাড়ির ভিতর ঢুকে খেলাই কাল! মুর্শিদাবাদে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু ২ শিশুর]
রাজ্য সরকার একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্যবাসীকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিতে। কৃষক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া থেকে ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য অর্থ যোগানের ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য। এছাড়াও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য ঋণের ব্যবস্থা-সহ একাধিক প্রকল্প রয়েছে। নবান্ন (Nabanna) সূত্রে খবর, প্রশাসনের নজরে এসেছে সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু ব্যাংক এই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনওভাবেই সাহায্য করছে না অথবা ঢিলেমি করছে। এর ফলে রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে। সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন রাজ্যের বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী। দেশে এবং বিদেশে পড়তে যাওয়ার সময় এসে গেলেও বিভিন্ন টালবাহানায় তাঁদের ঋণ থেকে বঞ্চিত করছে একাধিক ব্যাংক। একাধিক অভিযোগ নবান্নের নজরে আসায়, ব্যাংকগুলিকে এর আগেও সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এই ধরনের কাণ্ড ঘটানোয় এবার কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলানো হবে বলেই নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, বিষয়টি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে ব্যাংকগুলিকে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে এই সমস্ত ব্যাংকের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করবে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন দপ্তরের যে সমস্ত অ্যাকাউন্ট রয়েছে তা অন্য ব্যাংকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প ও অন্যান্য কাজে ব্যাংকে সরকারি টাকা জমা থাকে। তার পরিমাণ সব মিলিয়ে অনকে। ফলে যে ব্যাংকগুলির সঙ্গে রাজ্য সরকার আর্থিক লেনদেন ছিন্ন করবে, তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে।
সেই বিষয়টিই নির্দেশ না মানা ব্যাংকগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বেশিরভাগ বেসরকারি ব্যাংক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, কিষান ক্রেডিট কার্ড, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দিচ্ছে না। তবে বেশিরভাগ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্ক এই ক্ষেত্রগুলিতে যথেষ্ট সাহায্য করছে। কয়েকটি অবশ্য ব্যাতিক্রমও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কোন কোন ব্যাংক এই কাজ করছে, তার তালিকা তৈরি করতে অর্থসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।