সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মীয় সম্প্রীতির নজির বাংলার বুকে কম নেই। মন্দির চত্বরে মুসলিম শিল্পীর হাতে অনন্য সুন্দর আলপনা ফুটে ওঠা, সংখ্যালঘু ব্যক্তির হাতে দেবী দুর্গার পূজা থেকে পীরের দরগার জন্য হিন্দুদের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, এমন সহাবস্থান এই পবিত্র ভূমির অতি পরিচিত দৃশ্য। সেই তালিকাই এবার আরও দীর্ঘ হল। নিজের বিধানসভায় এলাকায় ভেঙে পড়া একটি শনি মন্দির পুনর্নির্মাণ করে পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাপ্রকাশ করলেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী তথা কসবার তৃণমূল বিধায়ক জাভেদ আহমেদ খান (Javed Ahmed Khan)। বুধবার তা উদ্বোধনের পর বৃহস্পতিবার থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে গেল মন্দিরের দরজা।
২০১৭ সালে চৌবাগা (Choubaga) এলাকায় একটি ব্রিজ তৈরি হয়। সেসয়ম শনি মন্দিরটি ভাঙা পড়েছিল। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধি জাভেদ খানের এলাকায় এই মন্দির ভাঙা পড়া নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল এলাকাবাসীর একাংশের মনে। এরপর ব্রিজটি তৈরি হওয়ার পর নিজের বিধায়ক তহবিল থেকে মন্দিরটিকে নতুন করে সুসজ্জিত করলেন মন্ত্রী জাভেদ খান। বুধবার মন্দিরের উদ্বোধন করেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। হাতে হাত মিলিয়ে উদ্বোধন করেন জাভেদ খান নিজেও। উপস্থিত ছিলেন কো-অর্ডিনেটর শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। বুধবার এই উপলক্ষে এলাকার প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষের ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা করেন মন্ত্রী জাভেদ খান।
[আরও পড়ুন: জরুরি ভিত্তিতে শুনানিতে সুরাহা নেই, রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোয় ‘না’ সুপ্রিম কোর্টেরও]
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবারই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখার পক্ষে বার্তা দিয়ে থাকেন। তাঁর মতে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। বাংলা সব ধর্মের সহবস্থান। প্রত্যেকটি উৎসবেই বাংলার সমস্ত ধর্মের মানুষরা শামিল হন। রাজ্যের আরেক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বহু বছর ধরে নামী দুর্গাপুজোর আয়োজন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এবার জাভেদ খান তৈরি করলেন শনি মন্দির।
[আরও পড়ুন: ‘রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী নন, অথচ প্রধানমন্ত্রী বহিরাগত!’, তৃণমূলকে খোঁচা দিলীপের]
এ বিষয়ে নাম না করে বিজেপিকে নিশানায় এনে মন্ত্রীর বক্তব্য, ”ধর্ম আর রাজনৈতিক মঞ্চ দুটো আলাদা। কোনও রাজনৈতিক দল বাংলায় ধর্ম নিয়ে বিভাজনের সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘবদ্ধ সৈনিক। নন্দীগ্রাম থেকে সিঙ্গুর, CAA থেকে NRC – সব কিছুতেই বাংলা সংস্কৃতিকে ধরে রাখব। বাংলার মাটি রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের মাটি।” তিনি আরও বলেন যে সেবার মন্দির ভাঙা নিয়ে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল সাধারণের মনে, শনি মন্দিরটি ফের তৈরি করে তিনি বোঝাতে চাইলেন, ব্রিজ তৈরির জন্য মন্দির ভাঙা তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল না, সরকারি কাজের জন্যই তা ভাঙতে হয়েছিল।
দেখুন ভিডিও: