ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্য়ায়: সবুজ সুনামিতে কার্যত ভাসছে শহর কলকাতা (Kolkata)। পুরসভার ভোটে (Kolkata Municipal Election) প্রত্যাশামতোই বিপুল ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের প্রার্থী। ফের নতুন পুরবোর্ড গড়বে শাসক শিবির। মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই এই ফলাফলের ট্রেন্ড স্পষ্ট হয়ে যায়। হেভিওয়েট প্রার্থী – দেবাশিস কুমার, মালা সাহা, ফিরহাদ হাকিমরা জিততেই উচ্ছ্বাসে মাতলেন দলীয় সমর্থকরা। দলীয় পতাকা, সবুজ আবির, ফুল-মালা নিয়ে শুরু হয়ে যায় বিজয়োৎসব। এরপর দুপুরে কামাখ্যার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জয়ের জন্য তিনি কলকাতাবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
মমতা বলেন, ”কলকাতার নাগরিকবৃন্দ যেভাবে ভোটে আমাদের সমর্থন করেছেন, মা-মাটি-মানুষকে, আমার ভাই- বোনেদের প্রণাম, অভিনন্দন, সালাম জানাই। আমি মনে করি, এই নির্বাচনটা হয়েছে গণ উৎসবে গণতন্ত্রের জয়। ভোটটাই হয়েছে উৎসবের মতো করে। এটাই মানুষ সবথেকে বেশি গণতন্ত্রে আশা করে। আমি যেহেতু আজ কামাক্ষ্যায় যাচ্ছি, যাওয়ার আগে যতটা পারলাম দেখা করে গেলাম। আপনাদের জানিয়ে গেলাম আমরা মা-মাটি-মানুষের প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞ। মা-মাটি-মানুষ আমাদের যত সমর্থন দেবেন, আমরা তা আরও নত মস্তিষ্কে আরও বেশি করে কাজ করব। কলকাতা আমাদের গর্ব। বাংলা আমাদের গর্ব। কলকাতা এবং বাংলাই সারা দেশকে পথ দেখিয়ে গর্বের দিকে নিয়ে যাবে। এটা আমি বিশ্বাস করি।”
[আরও পড়ুন: KMC Election Result: ভোট গণনাকেন্দ্রের বাইরেই সংঘর্ষে জড়াল কংগ্রেস-তৃণমূল, উত্তেজনা নেতাজি ইন্ডোরে]
যাকে বলে ‘ল্যান্ডস্লাইড ভিক্টরি’, তেমনটাই দেখা গেল পুরভোটের একুশের ফলাফলে। এ নিয়ে পৃথকভাবে মমতার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ”নিশ্চয়ই এটা জাতীয় রাজনীতির জন্যও বড় জয়। কারণ, অন্যান্য সর্বভারতীয় দলও এই ভোটে আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় শামিল হয়েছিল। ওরা একসঙ্গে লড়েছে। বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম প্রত্যেকে লড়লেও মানুষ ওদের হারিয়ে দিয়েছে। এটাই মানুষের রায়। এটা উন্নয়নের কাজ করার জন্য, মানুষের কাজ করার জন্য আমাদের সাহায্য করবে। আমরা আরও বেশি বেশি করে কাজ করব মানুষের জন্য।” এরপরই বিরোধীদের একযোগে তাঁর কটাক্ষ, ”বিজেপি ভোকাট্টা, সিপিএম নো পাত্তা, কংগ্রেস স্যান্ডুইচ।”
[আরও পড়ুন: বউ পালাল…! দুই রাজমিস্ত্রীর সঙ্গে মুর্শিদাবাদ থেকে মুম্বই পাড়ি বালির ২ গৃহবধূর, তারপর…]
দলের বিপুল জয় নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, ”আমাদের দলের ল্যান্ডস্লাইড ভিকট্রির কারণ আমি ভূমিকন্যা। আমরা মাটির মানুষ। আমরা এই মাটিতেই কাজ করি। আমরা আকাশে কাজের কথা বলি না। আমরা যা বলি সেটাই করি। এক কথা বলে অন্য কাজ করি না। কলকাতা দেখুন কত সুন্দর হয়ে গিয়েছে। আগামিদিনে যা বাকি আছে তাও করব। কলকাতা এখন সবথেকে নিরাপদ শহর। আমি চাই কলকাতার আরও সৌন্দর্যায়ন। আমার এখন লক্ষ্য আরবান এরিয়া, সেমি আরবান এরিয়া, গ্রাম সবকিছু উন্নত করা।”
এদিন ফলাফল স্পষ্ট হতেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম। সেখানে তিনজনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয় বলে খবর। আগামী ২৩ তারিখ মেয়র পদে শপথ হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওইদিন মহারাষ্ট্র নিবাসে জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার পর মেয়রের নাম চূড়ান্ত করা হবে।