সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের জেরে গ্রেপ্তার রোদ্দুর রায় (Roddur Roy) । তাতেই তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। চলছে পক্ষ-বিপক্ষের তরজা। এমন পরিস্থিতিতেই সরব বাংলার জনপ্রিয় ইউটিউবাররা। জানালেন নিজেদের মতামত।
উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁকুড়া মিমস): সমস্ত মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছেন রোদ্দুর রায়। সমাজকে বার্তা দিতে চান, ভাল কথা। সেটা একটা ন্যূনতম ভদ্র ভাষায় দেওয়া উচিত। কারণ কথা বলার সময় শব্দচয়ন সবসময় মাথায় রাখতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, ইউটিউব (Youtube) একটা কোম্পানি। সেই কোম্পানির নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে। ইউটিউব স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম। রোদ্দুর রায় ভেবেছিলেন, স্বাধীন প্ল্যাটফর্মে যা খুশি তাই করতে পারি। হ্যাঁ, যা খুশি তাই করা যায়, কিন্তু তাই বলে যাকে তাকে নোংরা গালিগালাজ করা যায় না। অনেক ইউটিউবার আগে ভিডিওতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নানাবিধ চুটকি রাখত। কিন্তু দেখা গেল, কিশোর-কিশোরীরাও ইউটিউব ব্যবহার করছে। আমাদেরও বিষয়বস্তু পরিবর্তন করতে হয়েছে।
স্যান্ডি সাহা (ইউটিউবার): ওর মুখের ভাষা শুনেছেন। নামটা মুখে আনতেও লজ্জা লাগে। আমরা বাঙালি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুকান্ত ভট্টাচার্য আমাদের আবেগ। তাঁদের নিয়ে যে নোংরা খিস্তি করে তার সম্বন্ধে কিছু বলতেও আমার মুখে আটকায়। গ্রেপ্তার হয়েছে, সঠিক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্বন্ধে যে কথা বলেছে তা লজ্জাজনক শুধু নয়, কোনও মহিলা সম্বন্ধে ওই কথা বলা যায়? কেউ কেউ আবার তাকে সমর্থন করছেন! যাঁরা সমর্থন করছেন তাঁদের বলি, সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করবেন না। ওই ভাষার ব্যবহার, শব্দচয়ন কোনও পরিস্থিতিতেই সমর্থন করা যায় না।
[আরও পড়ুন: নায়ক যশের ছবি ছাড়ার ঘোষণায় চূড়ান্ত হতাশ, সংবাদিক বৈঠকে কেঁদে ফেললেন এনা সাহা]
ঝিলম গুপ্ত (ভিডিও ক্রিয়েটর): রোদ্দুর রায়ের ভিডিওর ভাষা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত। তবে কাউকে খুন করার চেয়ে চারটে খিস্তি দেওয়া অনেক ভাল। যদিও আমি নিজে যে ভিডিও ক্রিয়েট করি তাতে খিস্তি থাকে না। কোনও অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়েও আপলোড করি না। মাথায় রাখতে হবে, মোবাইল এখন খুদেদের হাতেও থাকে। ভিডিও আপলোড করার সময় অবচেতনে সেটাও মনে রাখতেই হয়। আমার ভিডিওতে হাজার হাজার লাইকের মধ্যে প্রবীণ ব্যক্তি যেমন থাকে, তেমন স্কুল পড়ুয়াও থাকে। ব্যক্তিগতভাবে গালাগালি দিয়ে সাবসক্রাইবার বাড়ানোতেও বিশ্বাস করি না। তবে সেটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি মনে করি, ভিডিও আপলোড করার আগে কিছু নৈতিকতা মেনে চলা উচিত।
সোহম মণ্ডল (দ্য বং ডায়েরি): রোদ্দুর রায়ের ভিডিওতে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয় তাকে সমর্থন করার প্রশ্নই নেই। অত্যন্ত অশ্রাব্য। কে কী ধরনের ভিডিও তৈরি করবেন সেটা নির্ভর করে তাঁর মানসিকতার উপর। আমার ভিডিওতে কয়েক হাজার ভিউ থাকে। কিন্তু সেখানে কোনওরকম গালাগাল দেওয়া হয় না। সম্প্রতি রূপঙ্কর বাগচী বিতর্কিত লাইভ ভিডিওতে যে ধরনের কথা বলেছেন সেটাও অত্যন্ত কুরুচিকর। তবে গালাগাল দেওয়া যেমন খারাপ, তার চেয়েও খারাপ অপরাধমূলক কাজ করা। একজন ভিডিও ক্রিয়েটর হিসাবে চাইব রোদ্দুর রায় যেমন গ্রেপ্তার হলেন, আগামী দিনে সমাজের অপরাধ সংগঠিত করা লোকেরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবে।