চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নন্দীগ্রাম খুনে এবার গ্রেপ্তার বিজেপি কর্মী। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। এদিকে তাদের গ্রেপ্তারির দাবিতে মৃত তৃণমূল কর্মীর দেহ নন্দীগ্রাম থানার সামনে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। মোট ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২।
তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় সোমবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। দুপুরের দিকে ভোলানাথ মণ্ডল নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে ময়নাতদন্তের পর মৃত বিষ্ণুপদ মণ্ডলের দেহ ফিরতেই তা নিয়ে নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল নেতা-কর্মী। ছিলেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মাইতি, সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ান, বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র, নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ, সহ-সভাপতি শেখ আলরাজি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সরকারি সভাধিপতি সুহাসিনী কর, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম-সহ অন্যান্যরা। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। সেই কারণেই এই খুন। এদিকে বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা।
উল্লেখ্য, রবিবার ছিল তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ভোট। তাতে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের কাঞ্চননগর হাই স্কুল ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বিজেপি-তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তখন থেকে উত্তেজনার পরিবেশ ছিল নন্দীগ্রামে। এই কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ভোটে হলদিয়া, সুতাহাটা, মহিষাদল, ময়না,তমলুক, চণ্ডীপুর-সহ মোট বারোটি শাখায় ৬৯টি আসনে ভোট হয়েছিল। তার মধ্যে ৫৬টি আসনে জয়ী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ বোর্ড গঠনের ক্ষমতা অর্জন করে। শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম এক এবং দুই নম্বর ব্লকে বিজেপি ১৩টি আসনে জয়ী হয়ে। সেই জয়ের দম্ভ ভোট পরবর্তী প্রতিহিংসায় পরিণত হয়। চরম তাণ্ডবের শিকার হন নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের ৭ নম্বর জলপাই গ্রামের বিষ্ণুপদ মণ্ডল। অভিযোগ, রবিবার রাতে ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয় বিজেপি আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী। তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের মারধরে জখম হন তৃণমূল কর্মীর দাদা গুরুপদও।