অর্ণব দাস, বারাকপুর: ফের গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তাদের অবৈধ নথি বানিয়ে তৈরি করে এদেশের নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করে জালে আরও তিন। বছর শেষে মোট ছজনকে গ্রেপ্তার করল হাবড়া থানার পুলিশ।
বছর খানেক আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে এরাজ্যের হাবড়ায় এসে মতিউর রহমান নাম ভারিয়ে হয়ে যায় মতিন সরকার। যদিও জাল পরিচয়পত্র বানিয়েও শেষ রক্ষা হল না। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার মতিউর-সহ মোট ছজনকে গ্রেপ্তার করল হাবড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ মতিয়ার রহমান, সন্ধ্যা রায় এবং তাঁর মেয়ে সুপর্ণা রায় অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করেছিল। বাকি তিন ধৃত সায়েম হোসেন ওরফে বিটু, মিন্টু দাস ও অমৃতলাল দাস ওরফে অমিত। তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আশ্রয় দেওয়া-সহ জাল ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে সহায়তা করেছিল। ধৃত অনুপ্রবেশকারীদের থেকে দুটি জাল আধার কার্ড উদ্ধার হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
ধৃতদের কাছ থেকে দুটি আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছিল। সোমবার বিকেলে গোপন সূত্রে অভিযান চালিয়ে আনোয়ার বেরিয়া এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। মঙ্গলবার ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃত বাংলাদেশিদের এদেশে আসার কোনও বৈধ কাগজ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মতিয়ারের বাড়ি বাংলাদেশের নাটোরে। প্রায় এক বছর আগে সে চোরাপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিল। তাকে হাবড়ায় আশ্রয় দিয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দা সায়েম হোসেন এবং মিন্টু। শুধু আশ্রয় দেওয়াই নয়, এক বছরের মধ্যে জাল নথি ব্যবহার করে মতিয়ারকে মতিন সরকারের নামে তারা এদেশের জাল আধার কার্ডও বানিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। পাশাপাশি মাস ছয়েক আগে বাংলাদেশের বরিশাল থেকে সন্ধ্যা রায় তার মেয়ে সুপর্ণাকে নিয়ে চোরাপথে এদেশে এলে তাদের আশ্রয় দিয়েছিল আরেক বাসিন্দা অমিত মণ্ডল। হাবড়ার আনোয়ারবেড়িয়ার ঠিকানার জাল নথি দিয়ে সুপর্ণার নামে একটি আধার কার্ড বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির আবহে এরাজ্যে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তাই বিভিন্ন থানা এলাকার পুলিশ বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাবড়া থানার জালে ধরা পড়ল তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এবং তাদের আশ্রয়দাতা তিনজন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিন অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে বৈদেশিক আইন ও জালিয়াতি এবং ধৃত তিন ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়া এবং জালিয়াতির ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।