shono
Advertisement

নিজের বেতনের টাকায় চাল-ডাল বিলি, করোনা আবহে দুঃস্থদের ত্রাতা পুলিশ আধিকারিক

পুলিশ আধিকারিকের উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। The post নিজের বেতনের টাকায় চাল-ডাল বিলি, করোনা আবহে দুঃস্থদের ত্রাতা পুলিশ আধিকারিক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 06:17 PM Mar 26, 2020Updated: 06:17 PM Mar 26, 2020

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: কে বলে পুলিশ শুধু লাঠিপেটাই করে? করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতারও পরিচয় দিলেন উর্দিধারী। তা দেখে হতবাক দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রামনগর থানা এলাকার বাসিন্দারা। নিজের বেতনের টাকায় অসহায় দু:স্থ মানুষকে গত দু’দিন ধরে চাল, ডাল, তেল, আলু, পিঁয়াজ নিজেই বিলি করছেন ওই থানার এক সাব ইন্সপেক্টর আবুল মারজান।

Advertisement

দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। বন্ধ কলকারখানা। বন্ধ দোকানপাট, হাটবাজার। কাজ নেই মানুষের। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ আজ বেকার। লকডাউন উপেক্ষা করে তাই রোজগারের ধান্দায় পথে নামতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। আর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সেই পথে নামতে গিয়েই প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে হেনস্থা হতে হচ্ছে তাঁদের। কোথাও চলছে কান ধরে ওঠবস। কোথাও আবার পুলিশের লাঠিপেটা। নিজের ও পরিবারের খিদে মেটাতে মুখ বুজে হজম করতে হচ্ছে সবই। ফলতার রামনগরের বিভিন্ন এলাকাতেও সেই একই চিত্র। আর সেখানেই এবার অসহায় মানুষের পাশে ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গেল ওই  পুলিশ আধিকারিককে।

লকডাউনের প্রথম দিনেই রামনগর থানার অন্যান্য পুলিশ কর্মীর সঙ্গে ডিউটিতে বেরিয়েছিলেন রামনগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর আবুল মারজান। তিনি লক্ষ্য করেন, মারণ করোনা ভাইরাসের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই বিভিন্ন এলাকায় মানুষ হাঁটছেন রাস্তায়। তাঁদের বেশিরভাগই শ্রমিক শ্রেণীর। বাড়িতে থাকার সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এত মানুষ কেন রাস্তায়! কৌতূহলবশতই সে প্রশ্ন করেছিলেন ওই আধিকারিক কাউকে কাউকে। পথচলতি মানুষের উত্তর শুনে একটুও রক্তচক্ষু দেখাননি। বরং তাঁদের প্রতি সহানুভূতিই দেখান ওই পুলিশ অফিসার। আর তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ওই মানুষগুলোর জন্য কিছু করার। যেমন ভাবা তেমনই কাজ।

[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া, সাহায্যের হাত বাড়ালেন শহরের পুজোওয়ালারা]

বুধবার থেকে ডিউটিতে বেরিয়ে একটি অটো রিকশায় তিনি তুলে নিচ্ছেন নিজের পকেটের পয়সায় কেনা চাল, ডাল, তেল, আলু ও পিঁয়াজ ভরতি বেশ কিছু প্যাকেট। পরিমাণে অল্প হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় ওইসব জিনিসপত্র খাবারের সন্ধানে পথে বেরনো অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন তিনি। কোনও নির্দেশ নয়, পরামর্শ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে না বেরোনোর। তাঁদের বোঝাচ্ছেন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে একবার এলে এলাকায় সেই ছোঁয়াচ রোগের ভয়াবহতা কতখানি হতে পারে সে সম্পর্কে। তাঁর কথা শুনে মাথা নিচু করেই ফের ঘরের দিকে পা বাড়াচ্ছেন পথচলতি সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবারও পুলিশের ওই আধিকারিককে এলাকায় এলাকায় গিয়ে এভাবেই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়।

সাব-ইন্সপেক্টর আবুল মারজান বলেন, “দেশের এমন এক জরুরি অবস্থায় ডিউটি করতে বেরিয়ে অসহায় মানুষদের দেখছি। সামান্য ক্ষমতায় যতটুকু সম্ভব তাঁদের সাহায্যের চেষ্টা করছি। যতদিন পারব এভাবেই চালিয়ে যাব। যাতে খাবারের সন্ধানে অসহায় মানুষকে লকডাউনের সময় অযথা প্রতিদিন পথে না বেরতে হয়। করোনার সংক্রমণ রুখতেই হবে। তা সে যেভাবেই হোক।” তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন থানার অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মীরা। সাধারণ মানুষও পুলিশ আধিকারিকের কাজে রীতিমতো বিস্মিত। অনেকেই দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন তাঁকে।

The post নিজের বেতনের টাকায় চাল-ডাল বিলি, করোনা আবহে দুঃস্থদের ত্রাতা পুলিশ আধিকারিক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement